ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

অর্জিত হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা, ফেনীতে আমনে ক্ষতি ৩০ কোটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৭
অর্জিত হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা, ফেনীতে আমনে ক্ষতি ৩০ কোটি অর্জিত হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা, ফেনীতে আমনে ক্ষতি ৩০ কোটি, ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে রোপা আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। চলবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। ফেনী জেলায় এ মৌসুমে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. খালেদ কামাল বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এ বছর অসময়ের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ডলে ফসল এবং ধানের প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে, যার কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সমস্যা হচ্ছে।

উফশী আমন, হাইব্রিড ও স্থানীয় জাত মিলিয়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬৬ হাজার ২শ ৫৯ দশমিক ৬ হেক্টর জমি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২ হাজার ৫শ ৭ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা থেকে অর্জিত জমির ক্ষতি হয় ৩শ ৫৭ দশমিক ৫ হেক্টর। অর্জিত হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা, ফেনীতে আমনে ক্ষতি ৩০ কোটি, ছবি: বাংলানিউজজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতদর সূত্র জানায়, পুরো জেলায় মোট দণ্ডায়মান ফসল ছিলো ৬৫ হাজার ২শ ১৫ হেক্টর জমি, দুর্যোগে আক্রন্ত হয় ৫ হাজার ৯৭ হেক্টর, ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৬শ ৬ হেক্টর ফসলি জমি, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২ হাজার ২শ ৪১ হেক্টর জমি, আংশিক ক্ষতি থেকে সম্পূর্ণ ক্ষতিতে রুপান্তর হয় ৯শ ৫ হেক্টর, মোট ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২ হাজার ৫শ ৭ হেক্টর ফসলি জমি, যা শতকরা হারে ক্ষতি ৩ দশমিক ৮৫, উৎপাদনে ক্ষতি হয় ৭ হাজার ২শ ৬৪ মেট্রিক টন, টাকার অংকে ৩০ কোটি ৫০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর তিন দফা বন্যায় জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ছাগলনাইয়ার বেশ কিছু স্থানে রোপা আমনের ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু কিছু জমিতে এখনও পানি জমে আছে যার কারণে ফসল কাটা সম্ভব হচ্ছে না।

কৃষকরা জানান, আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের শেষের দিকের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার ছয়টি উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল, বীজতলা ও সবজি নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষ করে আগস্টের মধ্যভাগে দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলার ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার ৬ হাজার হেক্টর জমিতে পানি জমে যাওয়ায় রোপা আমনের ক্ষতি হয়েছে। সেপ্টেম্বরে মাঝামাঝিতে তৃতীয় দফা বন্যায় ৫শ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার রোপা আমন ক্ষতি হয়েছে।

জেলার ফুলগাজীর গোসাইপুর এলাকার কৃষক আবদুর রউফ বাংলানিউজকে জানান, তিনি মোট দুই একর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছেন। বারবার বন্যায় তার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জমিতে তিন দফা আমনের চারা রোপন করলেও কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়নি।
অর্জিত হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা, ফেনীতে আমনে ক্ষতি ৩০ কোটি, ছবি: বাংলানিউজ
উপ-পরিচালক ড. খালেদ কামাল বলেন, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এ জেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। ১৮ হাজার ৩শ ১১ কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ৩০ কোটি ৫০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্য করতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফদরের পক্ষ থেকে ইত্যেমধ্যে ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী বোরো মৌসুমে সরকারের পক্ষ থেকে কিছুটা সহয়তা পাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।  

বোরো মৌসমে পতিত জমি চাষ করে উৎপাদনে যে ঘাটতি রয়েছে তা মেটানো সম্ভব হবে বলেও জানান কৃষি এই কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৭
এসএইচডি/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।