বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে আচার্য জগদীশচন্দ বসু একাডেমিক ভবনের অ্যাগ্রো টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অ্যাগ্রো টেকনোলজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক, গবেষণা (চলতি দায়িত্ব) ড. তমাল লতা আদিত্য।
পরে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে ব্রি উদ্ভাবিত আধুনিক জাতের ধানের ওপর পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপনা করেন ড. তমাল লতা আদিত্য।
এর পর তিনি ব্রি উদ্ভাবিত আমন, বোরো ও আউশ মৌসুমের বিভিন্ন আধুনিক ও হাইব্রিড জাতের ধানের ওপর আলোকপাত করে খুলনা উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য উপযোগী কয়েকটি জাতের কথাও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে সাড়ে ৭ কোটি মানুষের জন্য যে ধান উৎপন্ন হতো বর্তমানে তার দ্বিগুণেরও বেশি জনসংখ্যা বেড়েছে। বিজ্ঞানীদের নিরন্তর গবেষণায় এই বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য-শস্য বিশেষ করে ধানের উৎপাদনও বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। এটি আমাদের দেশের কৃষিক্ষেত্রে এক ধরণের বিপ্লব। ব্রি এবং বিনার বিজ্ঞানীরা দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলার জন্য নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনে সচেষ্ট।
ধান গবেষণায় নিবেদিত বিজ্ঞানীরা এখন উৎপাদন ক্ষেত্রে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। ফলে নেক ব্লাস্ট, বন্যা, জলাবদ্ধতা, খরা, লবনাক্ততা, দুর্যোগ মোকাবেলা বা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব এবং ইতোমধ্যে এমন অনেক জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।
তমাল লতা আদিত্য বলেন, মোটা চালের চাহিদা মিটে গেছে, ভোক্তারা এখন চিকন বা প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চালের দিকে ঝুঁকছেন। ব্রি সেদিকে নজর দিয়ে ইতোমধ্যে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির কয়েকটি জাত উদ্ভাবন করেছে এবং চিনি গুড়া, কালো জিরা ধানের উচ্চ ফলনশীল জাতও উদ্ভাবনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
যৌথ গবেষণা ও প্রযু্ক্তি সম্প্রসারণে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ব্রি’র কাজ করার সুযোগ রয়েছে এবং এ ব্যাপারে খুবির অ্যাগ্রো টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সঙ্গে ভবিষ্যতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম ব্রি’র পরিচালক গবেষণা ড. তমাল লতা আদিত্যকে ব্রি উদ্ভাবিত আধুনিক জাতের ধান নিয়ে উপস্থাপনা ও মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে হালনাগাদ গবেষণা তথ্য উপস্থাপন করায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। ভবিষ্যতে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গবেষণা ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সেমিনারে অ্যাগ্রো টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ব্রি গবেষণা পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলামের প্লান ব্রিডিং অ্যান্ড বায়ো টেকনোলজি ল্যাবরেটরিতে টিস্যু কালচারসহ কয়েকটি গবেষণার নমুনা পর্যবেক্ষণ করেন।
ড. তমাল লতা আদিত্য এ পর্যন্ত ১২টি আধুনিক জাতের ধান উদ্ভাবনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং আরও কয়েকটি নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন প্রচেষ্টার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৮
এমআরএম/জিপি