ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

তলিয়ে গেছে ঘোড়াদহ বিলের ৬ হাজার বিঘা জমির ধান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২২ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৮
তলিয়ে গেছে ঘোড়াদহ বিলের ৬ হাজার বিঘা জমির ধান ডুবে যাওয়া ধান কাটছে কৃষকরা। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে শিবগঞ্জের ঘোড়াদহ বিলের পানি নিস্কাশনের জন্য ধুমানীনগর নামে একটি মাত্র নালা কৃত্রিম উপায়ে বন্ধ করে দেওয়ায় তলিয়ে গেছে প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমির ধান। এতে শত শত কৃষকের মাথায় হাত উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঘোড়াদহ বিল থেকে কানসাট বাজার সংলগ্ন পাগলা নদী পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ৬০ মিটার প্রস্থ শত বছরের পুরানো ধুমানীনগর নালাটির তলদেশে প্রভাবশালীরা পাশের মাটি দিয়ে উঁচু করে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করায় বিলের পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। ফলে রঘুনাথপুর, শিকারপুরসহ ৫/৬ মৌজায় অবস্থিত শ্যামপুর, দাইপুকুরিয়া, মোবারকপুর, শাহবাজপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের শত শত কৃষকের প্রায় ৬ হাজার বিঘা জমির ধান ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

তলিয়ে যাওয়া বেশির ভাগ জমির ধান প্রায় ৪০ শতাংশ পেকেছে এবং ৬০ শতাংশ কাঁচা থাকায় সে ধান কাটতে পারছে না কৃষকরা। তবে সামান্য কিছু জমির ধান আধাপাকা হওয়ায় সে ধানগুলো কৃষকরা পানিতে গলা ডুবিয়ে কাটছে।  

মোবারকপুর টিকরীর গ্রামের রেজাউল করিম জানান, ঘোড়াদহ বিলে তার ১২ বিঘা জমিতে ধান রয়েছে। প্রতিবছরই এ জমির ধান দিয়েই সারা বছরের খাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের খরচ মেটান তিনি। প্রায় ৩ যুগ পর এ বছর বৈশাখ মাসে ভারি বর্ষণের ফলে ধানগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া না পারছেন কাটতে না পারছেন ধানের জমি ছেড়ে যেতে।  

যদি ধুমানীনগর নালাটি পরিষ্কার করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে অনেক কৃষক তার জমির ধান ঘরে তুলতে পারবে বলে জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন কৃষক নিজেদের হতাশার কথা জানিয়ে মৌখিক অভিযোগে বাংলানিউকে জানান, বিলের পার্শ্ববর্তী গঙ্গারামপুর, রঘুনাথপুরসহ কয়েকটি গ্রামের প্রভাবশালীসহ আরও অনেকেই নালার তলদেশে ধানের আবাদ করে পানি নিস্কাশন বন্ধ করে দিয়েছে। নালার দুই পাশের জমিওয়ালারা নিজ নিজ জমির মাথায় নালার জমি জোরপূর্বক দখল করে আবাদ করায় নালাটি দিন দিন সরু হয়ে গেছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আমিনুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ করে ভারি বর্ষণ হওয়ায় ওই বিলের প্রায় ৩০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এ বিষয়ে ৪৩ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নালার পানি নিস্কাশনে বাধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকদের জমির ধান রক্ষা করা হবে। ভবিষ্যতে যেনো আর কেউ কৃষকদের ক্ষতি করতে না পারে তার ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৮
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।