বোরো চাষে নতুন জাতের বীজ নিয়ে নতুন আশায় বিশাল কর্মযজ্ঞে নেমেছেন তারা।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কৃষকরা ইতোমধ্যে নতুন জাতের বীজ (ব্রি- ধান-৮১, ৮২, ৮৪ ও ৫৮ জাতের) রোপণ শুরু করেছেন।
আবহাওয়া ভাল থাকলে এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ অনুকূলে থাকলে অন্যান্য জাতের তুলনায় একটু আগেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন এমন আশা করছেন দেশের বৃহত্তম চলনবিল ও হালতিবিলের কৃষকরা।
আর কৃষি বিভাগের দাবি এসব নতুন জাতের বোরো ধানের উৎপাদন আশানুরূপ হলে এই জাতের বীজের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। এতে কৃষককে ভাল ও গুণগত মানের বীজ সহসায় পেয়ে যাবে। তাদের কারো জন্য অপেক্ষা বা ধর্ণা দিতে হবে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি ২০১৮-১৯ বোরো মৌসুমে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫৭০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৫৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
এ পর্যন্ত (১০ জানুয়ারি) জেলার সাতটি উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর বীজ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হতে পারে। গত বছর ৬১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। তাতে ধান উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৩ মেট্রিক টন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে সদর উপজেলায় ২ হাজার ৭০৮ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ৭ হাজার ৮৬০, সিংড়ায় ৩৪ হাজার ৫৬৩, গুরুদাসপুরে ৪ হাজার ৮২, বড়াইগ্রামে ৪ হাজার ৯৯৫, লালপুরে ১ হাজার ১০৮ ও বাগাতিপাড়ায় ৬৮৪ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চলনবিলের কৃষক আব্দুল বারি, সোলেমান ও ইদ্রিস আলী জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা এবার নতুন জাতের বীজ সংগ্রহ করে বীজতলা প্রস্তুত করেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তা রোপণ করা হবে। নতুন জাতে নতুন কিছু পাওয়ার আশা করছেন তারা। তবে তারা পরীক্ষামূলকভাবে দুই-তিন বিঘা করে আবাদ করবেন।
হালতিবিলের কৃষক কাউসার রহমান, বেলাল হোসেন, আব্দুল গফুর জানান, তারাও পরীক্ষামূলকভাবে নতুন জাতের ধানের বীজ ইতোমধ্যে জমিতে রোপণ করেছেন। আশানুরূপ ফলন হলে আগামীতে আরো বেশি করে এসব জাতের ধান চাষ করবেন এবং বীজ সংগ্রহ করবেন। তবে এসব বীজের প্রতি আশাবাদী তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এবার জেলার বেশির ভাগ কৃষক নতুন নতুন জাতের বীজ সংগ্রহ করেছেন। বিশেষ করে জিরাশাইলের বিপরীতে ব্রি ধান-৮১ জাত, ব্রি জাত-২৮ ও ২৯ এর বিপরীতে ব্রি ধান-৫৮, ৮১ ও ৮৪ জাত, ব্রি ধান ২৯ এর বিপরীতে ব্রি ধান-৫৮ জাত এবং স্বর্ণার বিপরীতে ব্রি ধান-৮২ জাত।
এরপরেও কৃষকরা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ধান বীজ রোপণ করছেন ব্রি ধান ২৮ ও ২৯ জাত। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বোরোর বীজ রোপণ শুরু হয়েছে চলবে মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত।
তিনি বলেন, কৃষকদের যথাযথ চেষ্টা আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ফসলে বাম্পার ফলন হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কৃষকদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৯
আরএ