আশিদ্রোন ইউনিয়নের সাইটুলা গ্রামের আবুল কালাম বলেন, ‘পানির কোনো সুবিধা নাই, অনেক জমি আছে যা ৫ থেকে ৭শ’ কেয়ার। যদি সরকার ডিপকলের ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে আমরা বোরো ক্ষেত করতে পারতাম।
সিন্দুখাঁন ইউনিয়নের পুরানগাঁওয়ের আব্বাস আলী বলেন, ‘আমরা এলাকাত ছড়া ও নদী নাই। পানির অভাবে বোরো হয় না। যে সাইটে ছড়া আছে, সে স্থানগুলোতে কিছুটা হয়। বড় একটা ডিপকল যদি সরকার থাকি দেয়া হয়, তাহলে উজানে বসালে বোরো ক্ষেত করা যেত। ’
একই ইউনিয়নের কুঞ্জবন গ্রামের রাজ কুমার বলেন, ‘আমরা তো বোরো করতাম চাই, পানি না পাইলে কই থাকি করতাম। পাম্প থাকলে গাঙ থাকি পানি তোলিয়া কোনো রকম করতাম পারতাম। ’
শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের ভাড়াউড়া গ্রামের চদর মিয়া, মোস্তফা মিয়া, আলামিন মিয়া বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর গ্রাম থেকে বস্তা সংগ্রহ করে বালু ভরিয়া ছড়া বাঁধ দিয়া নালা করিয়া পানি আনিয়া বোরো করি। সরকার থেকে শুনছি পাম্প দেয়া হয়, আমরা গ্রামও পাম্প থাকলে সব জমিত বোরো করতাম পারতাম। ’
কালাপুর ইউনিয়নের রসিদ মিয়া বলেন, ‘উঁচু এলাকা হওয়ায় আমরার গ্রামে বোরো হয় না। আমরা এসময় আলু, ধনিয়া পাতা, টমেটো চাষ করি। ’
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর ২০১৭-১৮ সালের হাওরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৬৯৭ হেক্টর। হাওর বহির্ভূত বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৮৯৮ হেক্টর। ওই বছরে হাওরে অর্জিত বোরো আবাদ ছিল ৩ হাজার ৪৪৭ হেক্টর। হাওর বহির্ভূত বোরো আবাদ হয়েছিল ৬ হাজার ৩৫৫ হেক্টর। উৎপাদন ছিল ৩৬ হাজার ৪৪১ মেট্রিক টন।
চলতি ২০১৮-১৯ সালের মৌসুমে হাওরে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬১৭ হেক্টর। হাওর বহির্ভূত বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৫২ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে এ পর্যন্ত হাইল হাওরে অর্জিত বোরো আবাদ হয়েছে হাইব্রিড ৭ হেক্টর ও উফশী ৩ হাজার ৩১০ হেক্টর। হাওর বহির্ভূত বোরো আবাদ হাইব্রিড ১৫ হেক্টর ও উফশী ৪৫০ হেক্টর ফসলি জমিতে। এছাড়াও এ বছর সেচ সুবিধা না থাকায় ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে না।
মির্জাপুর ইউনিয়নের আংশিক কিছু গ্রামে যাত্রাপাশা, বৌলাশি, মির্জাপুর, শাষন, গন্ধবপুর; ভূনবী ইউনিয়নের আলিশারকুল, লইয়ারকুল, পাত্রীকুল, রাজপাড়া; শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন, সিন্দুরখাঁন ইউনিয়ন, আশিদ্রোন ইউনিয়নগুলোর আংশিক কিছু গ্রাম এলাকার জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা বাংলানিউজকে বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল, কালাপুর প্রভৃতি ইউনিয়নের উপরের এলাকায় সেচের অভাবে ফসল হচ্ছে না। তবে হাওর এলাকায় পানি ব্যবস্থা আছে বলে সেখানে ফসল হয়। পৌষ-মাঘ থেকেই ছড়াগুলো শুকিয়ে সেচের অভাব দেখা দেয়। ’
এক্ষেত্রে ডিপসেচ ছাড়া আমরা কোনো সমাধান দেখছি না। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন জানিয়েছি বলেও জানান নিলুফার ইয়াসমিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
বিবিবি/আরবি/