কৃষি সংশ্লিষ্টদের মতে আবহাওয়া ভাল থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ভুট্টায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ ফলন হবে।
সরেজমিন নাটোরের হালতিবিলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অধিকাংশ কৃষক বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই ভুট্টার বীজ বপন করেছেন।
তবে কান্দি এলাকা কিংবা সদর উপজেলার উঁচু এলাকার কোথাও কোথাও আগাম রোপণ করা গাছ বড় হয়েছে এবং কোথাও কোথাও গাছে ফলও এসেছে। সেগুলো একটু আগাম ঘরে তোলা যাবে।
হালতিবিলের হালতি গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, গত মৌসুমে বোরো ধানে লোকসান হওয়ায় এবার বোরোর ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন তিনি। ধানের তুলনায় উৎপাদন খরচ ও সময় দু’টোই কম লাগে। তার মত অনেকেই ভুট্টার আবাদ করেছেন।
খোলাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক কাউছার রহমান জানান, এবার হালতিবিলে আগেই বন্যার পানি নেমে গেছে। বোরোর আবাদে যেহেতু সময় আছে, তাই আগে ভাগেই ভুট্টার বীজ রোপণ করেছেন। ভুট্টার পর সেখানে তারা তীলের আবাদ করবেন। কান্দি এলাকার নলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক গফুর, শাখাড়িপাড়া গ্রামের বজলুর রশিদ জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টার আবাদ লাভজনক তাই তারা রসুনের পরিববর্তে ভুট্টার আবাদ করেছেন। একই কথা আরো অনেক কৃষকের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৬৫২ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪২০ হেক্টর বেশি পরিমাণ জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ১ হাজার ৭৩৭ হেক্টর, সিংড়ায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ১ হাজার ৫০ হেক্টর, বড়াইগ্রামে ৭৯০ হেক্টর, লালপুরে ১৪৫ হেক্টর ও বাগাতিপাড়ায় ২৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবার মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৪৮ হাজার ৮৩৯ মেট্রিক টন। এ বছর আরো অধিক পরিমাণ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে রোপণ কাজ শুরু হয়েছে, চলবে মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশা করা যায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
আরএ