নেত্রকোণায় ফসলে চিটা বের হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাওরাঞ্চল কলমাকান্দা, মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীর বিভিন্ন কৃষকের জমি ঘুরে ক্ষতির এমনসব কারণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন গাজীপুর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানিরা।
ইনস্টিটিউটটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহম্মদ আশিক, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হীরেন্দ্র নাথ বর্মন, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তা ড. তুহিনা খাতুন সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত এসব এলাকা পরিদর্শন করেন।
তারা জানান, নির্দিষ্ট সময়ের আগে বীজতলা তৈরি ও চারা লাগানোর ফলে ওইসব উপজেলার ৬ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের গাছগুলো ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়। বৈজ্ঞানিক বা কৃষি ভাষায় যাকে বলা হয় ক্লোড ইনজুরি। এ সমস্যাতে কৃষকের ২৫২০ হেক্টর জমিতে ধানের পরিবর্তে চিটা হয়েছে। যা প্রতিটি কৃষকের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ক্ষতি হওয়ার পরও কৃষক তার জমি থেকে পঞ্চাশ শতাংশ ধান পাবেন। ভেঙে পড়ার মতো তেমন কিছু নেই। প্রাকৃতিক বড় কোনো দুর্যোগ না এলে এপ্রিল শেষের আগেই ৫০-৮০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। ফসল ঘরে তোলতে এরইমধ্যে কাস্তে হাতে মাঠে রয়েছেন কৃষক।
কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা আরো জানান, চলতি মৌসুমে নেত্রকোণার হাওর বেষ্টিত পাঁচ উপজেলাসহ দশ উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছিলো ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৫২ হেক্টর।
এরমধ্যে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬শ হেক্টর জমি। ২৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান, ১ লাখ ৬০ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল এবং ৩২০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো আবাদ করা হয়।
এদিকে অগ্রিম চাষাবাদ সম্পর্কে ইউনুছ, রহিম, সোবহান ও দ্বীনবন্ধুসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়িয়ে ঝুঁকি ছাড়া পুরো ফসল ঘরে তোলতে অগ্রিম চাষাবাদ করেছিলেন তারা। তবে বর্তমান ক্ষতির কথা মাথায় রেখে ভবিষ্যতে এরকম ভুল তারা আর করবেন না বলেও স্বীকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৯
এসএইচ