একদিকে মাটিতে নুয়ে পড়া ধান কাটতে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ২ গুন বেশি মজুরি। ফলনও পাওয়া যাচ্ছে তুলনামূলক কম।
আগে যেখানে প্রতি বিঘা ধান কাটতে কৃষকের খরচ হতো ২ হাজার টাকা থেকে ২৫০০ টাকা। বর্তমানে একই পরিমাণ জমির ধান কাটতে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ৪ হাজার টাকা থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত।
জেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি আর বাতাসের কারণে মাঠের ৯০ ভাগ ধান পানিতে শুয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে নষ্ট হতে শুরু করেছে ধান। অন্যদিকে ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ তো আছেই।
মহাদেবপুর উপজেলার কালোনা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির কারণে ধান গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এজন্য ভেজা হওয়ায় ধান কাটা শ্রমিকদের বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে। তাও আবার সময় মত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এ বছর ধানে কৃষকদের ব্যাপক লোকসান গুণতে হবে। বীজ, পানি সেচ, বিষ প্রায়োগ আবার ধান কাটার মজুরি সব মিলে বিঘাপ্রতি জমিতে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। আবার বিঘাপ্রতি ধান বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। এভাবে লোকসান দিয়ে কৃষক আর ধান চাষ করতে পারবে না।
জেলার সব থেকে বড় ধানের হাট মাতাজী হাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর বিঘাপতি গড়ে ২৬ মণ ধান পাবার আশা করা হলেও পাওয়া যাচ্ছে ১৬ থেকে ১৭ মন । আবার যার প্রতি মণ ধান কাটতে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ১৫ থেকে ১৮ কেজি পর্যন্ত ধান।
এছাড়াও জমিতে বিষ প্রয়োগ সেচ খরচ আবার কৃষকের শ্রম সব মিলে এবার ধানে লোকসান ছাড়া লাভ করা অসম্ভব। বাজারে ধানের দাম নেই। ভেজা ধান কিনতে অনিহা দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫’শ টাকা পর্যন্ত।
নওগাঁ ফারিহা রাইস মিলের স্বত্ত্বাধিকারী শেখ ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর কৃষকের ঘরের ধান শেষ হলে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়। এতে করে কৃষকরা কোনভাবে লাভবান হতে পারেন না। সরকারিভাবে শিগগিরই ধান-চাল ক্রয় শুরু করা না গেলে এই অচলাবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। এজন্য শিগগিরই সরকারিভাবে ধান-চাল কেনার ব্যবস্থা করতে হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ জি এম পাটোয়ারী বাংলানিউজকে জানান, এরই মধ্যে চলতি মৌসুমে প্রতি কেজী ধান ২৬ টাকা আতব চাল ৩৫ টাকা এবং সিদ্ধ চাল ৩৬ টাকায় কেনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
আরএ