বুধবার (১২ জুন) ফকিরহাট খাদ্যগুদামে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের সময় ১০ মণ ধান বিক্রি করতে এক কৃষকের ধানের ওজন করছিলেন খাদ্য বিভাগের লোকেরা। এসময় ওই কৃষকের কাছে নাম জানতে চাইলে তিনি জানান, তার নাম অমল চন্দ্র কুন্ডু।
পরে তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অমল চন্দ্র কুন্ডু নাম বলা মধ্য বয়সী ওই লোকটি উপজেলার তেকাটিয়া গ্রামের সুফল দাসের ছেলে সুমন দাস। তিনি দালালদের সহযোগিতায় প্রতারণার মাধ্যমে অমল চন্দ্র কুন্ডুর নামে কৃষিকার্ডে ধান বিক্রি করতে এসেছেন।
তিনি কেন এমন করলেন এ প্রশ্নে সুমন দাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘সে (দালাল) যেভাবে শিখিয়ে নিয়ে এসেছে সেভাবেই বলার চেষ্টা করেছি। আমাকে অমল চন্দ্র কুন্ডু সাজিয়ে ধান বিক্রয়র জন্য ওসিএলএসডির যোগসাজশে নিয়োজিত কিছু দালাল এখানে নিয়ে এসেছে। এটা নিয়ে এতো ঝামেলা হবে জানলে আমি এ কাজে জড়িত হতাম না। ’
শুধু সুমন দাসই না এ ধরণের অনেককেই সুমন দাসের মতো সাজিয়ে কৃষিকার্ডধারী কৃষকের নামে ধান কিনছে ফকিরহাট খাদ্য বিভাগ। যেসব ধানের স্থানীয় মূল্যের অতিরিক্ত টাকা দালাল চক্র ও খাদ্য বিভাগের লোকজন ভাগবাটোয়ারা করে নেয় বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
ফকিরহাট উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) আশরাফুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শুভদিয়া গ্রামের অমল চন্দ্র কুন্ডু, বাহিরদিয়া গ্রামের একেএম জাহাঙ্গির, জাকির হোসেন, আট্টাকী গ্রামের আইয়ুব আলী শেখ এবং আজিজ শেখ এ পাঁচজন কৃষকের কাছ থেকে ৩৮ মণ ধান ক্রয় করা হয়েছে। যারা ধান বিক্রি করছের তাদের হিসাবে টাকা জমা হবে। ফলে এখানে প্রতারণার কোনো সুযোগ নেই।
সুমন দাসের বিষয়ে তিনি বলেন, অমল চন্দ্র কুন্ডু কৃষিকার্ড নিয়ে ধান বিক্রয় করতে এসেছেন। কিন্তু সে ধান পরিমাপের সময় বাইরেও থাকতে পারে, এতে আমাদের কিছুই করার নেই।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সরকারি ধান সংগ্রহ কমিটির সভাপতি মোসা. শাহনাজ পারভীন বাংলানিউজকে বলেন, ধান ক্রয়ে অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাগেরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) একে এম শহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ফকিরহাট উপজেলার ওসিএলএসডি আশরাফুল হকের বিরুদ্ধে অনিয়মের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
জিপি