একসময় মেহেরপুরে প্রচুর পরিমাণ পাটের চাষ হলেও গত কয়েক বছরে এ জেলায় পাট চাষ কমেছে আশঙ্কাজনক হারে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ২৩ হাজার ৭৫৫ হেক্টর, ২০১৬ সালে ২৭ হাজার ২১০ হেক্টর, ২০১৭ সালে ২৫ হাজার ৮৪৫ হেক্টর, ২০১৮ সালে ২০ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছিল।
কৃষকরা বলছেন, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই লোকসানের ভয়ে দিন দিন পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন মেহেরপুরের কৃষকরা।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে সরকার। পাট চাষে মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে নানাভাবে কাজ করছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামের কৃষক রমজান আলী, কামাল হোসেন, তেরাইল গ্রামের আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েক বছর ধরে পাট চাষে লোকসান গুনতে হয়েছে কৃষকদের। তাই অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পাট চাষ থেকে। বিঘাপ্রতি জমিতে পাট আবাদে ১০/১১ হাজার টাকা খরচ হলেও বিক্রি হয় আট থেকে নয় হাজার টাকা। ফলে দিন দিন কমছে পাটের চাষ।
পাট চাষি আব্দুল হামিদ, মিলন রহমান ও আব্দুল জাব্বার বাংলানিউজকে বলেন, দেশি জাতের বীজ না পাওয়ায় বেশি দামে বিদেশি বীজ কিনতে হয়। অনেক সময় নিম্নমানের বীজের কারণে ফলন ভালো হয় না। প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদন খরচের চেয়ে বিক্রি হয় কম। কৃষককে তিন থেকে চার হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়। তাই দিন দিন পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা।
কৃষকরা আরও বলছেন, জেলার একমাত্র পাট ক্রয়কেন্দ্রে পাট বিক্রি করতে হয় বাকিতে। তাছাড়া সময়মতো কৃষকদের কাছ থেকে পাট না কেনায় অন্য ফসল আবাদে যেতে পারেন না তারা। ফলে কম দামে পাট বিক্রি করে দিতে হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাট ওঠার সময় মিলগুলোতে পাট কেনা বন্ধ থাকে। আর এ সুযোগ নেন বড় বড় ব্যবসায়ীরা। তারাই সিন্ডিকেট করে কমিয়ে দিচ্ছেন পাটের দাম।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, নিম্নমানের পচন পদ্ধতির কারণে পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
এসআরএস