এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে আদিতমারী থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কৃষক ইসরাইল।
ইসরাইল হোসেন উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের আরাজি দেওডোবা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভূমিহীন কৃষক ইসরাইল হোসেন অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে তিন সন্তানের লেখাপড়াসহ ৫ সদস্যের সংসার পরিচালনা করছেন। তিন বছর আগে সঞ্চিত অর্থের ২০ হাজার টাকায় স্থানীয় আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুর রহিম শিমুলের ১৩ শতাংশ জমি বন্ধক নিয়ে চাষাবাদ শুরু করছেন। হঠাৎ সেই জমির মালিকানা দাবি করে ফসল নষ্ট করার হুমকি দেন একই উপজেলার টেপাটারী গ্রামের কাসেম প্রধানের ছেলে আলা উদ্দিন, জালাল উদ্দিন ও জয়নাল।
প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ করে ওই ১৩ শতাংশ জমিতে ১ হাজার ৮০০ মরিচ চারা রোপন করেন ইসরাইল। ফুল ও মরিচে ভরে উঠেছে মরিচ ক্ষেত। মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই ক্ষেতের মরিচ বাজারে তোলা যেত। হঠাৎ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে সেই ক্ষেতের সব মরিচ গাছ তুলে পাশের স্বর্ণামতি নদীতে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে ক্ষেতের এ অবস্থা দেখে কয়েকটি গাছসহ থানায় হাজির হন ইসরাইল হোসেন। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে আদিতমারী থানায় আলা উদ্দিন, জালাল উদ্দিন ও জয়নালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
ইসরাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, তিন বছর ধরে ওই জমি চাষাবাদ করছি। গত বছর প্রায় লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। এবারও লক্ষাধিক টাকা আয় হতো। কিন্তু আলা উদ্দিনরা গাছগুলো উপড়ে নদীতে ফেলে দিয়েছে। ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরার ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই।
কান্নাজরিত কণ্ঠে ইসরাইলের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, গাছগুলো সন্তানের মতো বড় করেছি। সকালে দেখি গাছগুলো উপড়ে ফেলে দিয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
দেওডোবা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, গরিব চাষির মরিচ ক্ষেতের সঙ্গে শত্রুতা করা ঠিক হয়নি। যারা এ ধনের কাজ করেছেন তাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ বলেও দাবি করেন তিনি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতের ফসল নষ্ট করা চরম অমানবিক। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
ওএইচ/