ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বোরোর চারা রোপণে ব্যস্ত চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
বোরোর চারা রোপণে ব্যস্ত চাষিরা বোরো ধানের চারা তুলছেন কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

ঠাকুরগাঁও: কর্মক্ষেত্রে সাধারণ চাকরিজীবীদের ছুটি থাকলেও কৃষকদের কোনো ছুটি নেই, একটার পর একটা কৃষিকাজ লেগেই থাকে। আর সেই কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। আমন ধান কাটার পরে শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন কৃষি আবাদ। শাক-সবজি, গম, ভুট্টাসহ নানা ধরনের চাষাবাদ শেষ হতে না হতেই আবার শুরু হয়ে যায় বোরো ধান রোপণের সময়। ন্যায্য দাম না পেয়েও বোরো ধান লাগানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা।

এদিকে সকালের শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা অবধি বোরোর জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউবা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন।

কেউ জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার বিতরণ কাজে ব্যস্ত। কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন। আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুসঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউবা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণ করছেন ক্ষেতে।  

চারা রোপণের প্রতিটি কাজ ঠিকমতো করলেও মনে শান্তি নেই কৃষকদের। সবার মনেই রয়েছে হতাশা। ধানের ন্যায্য দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে।  

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের চাষি রবীন বলেন, কিছুদিন ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। তাই ধান চাষাবাদ করে আমরা সব সময় হতাশার মধ্যেই থাকি। আবার মাঝেমধ্যে আশায় বুকও বাঁধি, না জানি কখন ধানের দাম বেড়ে যায়।

আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ি গ্রামের বিজয় রায় জানান, ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আমরা এবার বোরো ধান লাগানো কমিয়ে দিয়েছি। আগে যখন ধানের দাম পেতাম তখন আমরা ১০ থেকে ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করতাম। এখন আমরা শুধু সারা বছরের ভাতের জন্য যে চাল প্রয়োজন সেই পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করছি। এবার বোরো ধান লাগানো কমিয়ে দিয়ে বিভিন্ন শাক-সবজি চাষাবাদ করছি।

বোরো ধানের চারা তুলছেন কৃষক।  ছবি: বাংলানিউজঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মন্টু রাম জানান, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পর পর সেচ দিতে হয়। তারপরও যদি ন্যায্য দাম না পাই তবে লোকসানের মুখে পড়তে হবে আমাদের। তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন। বোরো আবাদে যেন আমাদের ভর্তুকি দেওয়া হয়।  

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর।  

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দীন বলেন, জেলায় সবেমাত্র বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের আবহাওয়ার গড় সর্বনিম্ন ১০ এবং সর্বোচ্চ ২৫ বিরাজ করছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবং গভীর নলকূপগুলো সচল হলে খুব শিগগিরই বোরো ধান রোপণ শেষ হবে এবং আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে পারবো বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।