বরিশাল: তীব্র শীত, কুয়াশা আর অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে বরিশালের আগৈলঝাড়াতে পান বরজে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এরইমধ্যে পান গাছে দাগ, শিকড় পঁচা ও পাতাঝরাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে।
গত এক বছর থেকে দক্ষিণের এ অঞ্চলে পানের বাজার ভালো যাচ্ছিলো জানিয়ে চাষি নির্মল চৌধুরী জানান, আকস্মিক শৈত্যপ্রবাহের কারণে পানের পাতায় হলদে দাগ দেখা দিয়েছে। পচে যাচ্ছে পান পাতা। এক পোয়া (৩২ বিড়াই এক পোয়া এবং ৬৪ পানে এক বিড়া) বড় পানের দাম চার তৃতীয়াশং কমে গেছে। আর মধ্যম ও ছোট আকারের পানের দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন মোকামে কম দামে পান বিক্রি হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা জানান,পানের পাতায় কালো দাগ থাকায় এবং পচে যাওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামের ব্যবসায়ীরাও কম দামে পান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
তাছাড়া পান পরিবহন এবং বিক্রিতে দু-তিনদিন সময় লাগে, এ সময়ের মধ্যে পাতা আরও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন বাজারে কম দামে পান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
পান ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম খান, রুবেল খান, আনিচ তালুকদার, স্বপন গাজী বলেন, শীত ও ঘন কুয়াশা আর অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের কারণে পানের পাতা লালচে হয়ে ঝড়ে পড়ে। বরজ থেকে পড়া পান সংগ্রহ করতে গেলে অন্য পানও ঝড়ে যায়। এসব পান বাজারজাত করার জন্য পান গাদি করার সময় দেখা যাচ্ছে পাতায় কালো দাগ। আবার পঁচা পাতাও পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে পানের বাজারে ধস নেমেছে।
মোল্লাপাড়া গ্রামের পান চাষি শহিদুল ইসলাম জানান, একবিঘা বরজ করতে খরচ হয় ছয় লাখ টাকা। এবার লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় জানান, সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পানবরজ বর্তমানে যে সব রোগবালাইয়ে সংক্রমিত হয়েছে সে ব্যাপারে প্রতিনিয়ত চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। অতিরিক্ত শীতের কারণে এ ধরনের রোগবালাই হচ্ছে। পানবরজের পরিচর্যা করলে এবং শীত কমে গেলে এক সপ্তাহের মধ্যে এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২২
এমএস/এমআরএ