হবিগঞ্জ: ১০ হাজার টাকা খরচ করে এক কানি জায়গায় বেগুন চাষ করেছিলেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লোকরা গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন। এখান থেকে অন্তত ২৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করার সম্ভাবনা ছিল।
আলাউদ্দিনের এক মণ ধানের বীজতলা এবং ১০ শতক জায়গার আখক্ষেতটিও বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। খোয়াই নদী থেকে লোকালয়ে ঢোকা পানিতে ফসল ডুবে যাওয়ায় এখন ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন।
আলাউদ্দিন বলেন, এ জমিগুলো থেকেই আমার সংসারের খরচ মেটে। এগুলো তলিয়ে যাওয়ায় সারাটি বছর আমার পরিবারকে কষ্ট করতে হবে।
শুধু আলাউদ্দিনই নন, এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জেলার হাজারো কৃষক। বানের জলে তাদের শুধু স্বপ্নই ভেসে যায়নি, ভেসে গেছে বছরের খোরাকও। অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার আউশ, বোনা আমনসহ নানা ধরনের ফসল তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে, জেলায় আউশ ধান চাষ হয়েছিল ৫১ হাজার ২৭৭ হেক্টর জমিতে। যার ১৫ হাজার ৭১০ হেক্টরই তলিয়ে গেছে। ১৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর বোনা আমনের পুরোটাই তলিয়ে গেছে। এছাড়া সবজি চাষ হয়েছিল ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। যার দেড় হাজার হেক্টর এখন পানির নিচে।
তলিয়ে যাওয়া জমির মধ্যে রয়েছে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ৭ হাজার হেক্টর আউশ, ২০ হেক্টর বোনা আমন ও ৭০০ হেক্টর সবজি, মাধবপুর উপজেলায় ১ হাজার ৭৯৭ হেক্টর আউশ ধান, ১ হাজার ৮০০ হেক্টর বোনা আমন ও ১৬০ হেক্টর সবজি, চুনারুঘাটে ৭৪৫ হেক্টর আউশ ও ৩২ হেক্টর সবজি, বাহুবলে ৭১৫ হেক্টর আউশ ও ৬০ হেক্টর সবজি, নবীগঞ্জে ১ হাজার ৯৫০ হেক্টর আউশ, বোনা আমন ১ হাজার হেক্টর ও ৩৪০ হেক্টর সবজি, লাখাইয়ে ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর আউশ, ৩ হাজার ২০০ হেক্টর বোনা আমন ও ১২০ হেক্টর সবজি, বানিয়াচং উপজেলায় ১ হাজার ১৫৩ হেক্টর আউশ, ৫ হাজার ৮৬০ হেক্টর বোনা আমন ও ১৫৫ হেক্টর সবজি এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর বোনা আমন এবং ৩০ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত।
কৃষি বিভাগ জানায়, ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে অবশিষ্ট জমিগুলোও তলিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২২
এসআই