ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ফেনীতে বোরো মৌসুমে বিনিয়োগ উঠেনি কৃষকের 

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২২
ফেনীতে বোরো মৌসুমে বিনিয়োগ উঠেনি কৃষকের 

ফেনী: ফেনীতে বোরো মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ক্ষতির দাবি করছেন কৃষকরা।  মৌসুমের শেষের দিকে রোগের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা।

এতে লাভ তো হয়নি বরং অনেকের বিনিয়োগও উঠে আসেনি বলে দাবি করেন কৃষকরা।

পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের আবুল হাশেম নামে এক কৃষক জানান, এ বছর ৮০ শতক জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। কিন্তু পাকা ধান ঘরে তোলার সময়ে ব্লাস্ট রোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। গুনগুনি পোকার কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ধান কাটতে হয়েছে।

গত বছরও একইভাবে ক্ষতি হয়েছিল। এভাবে হলে প্রান্তিক কৃষকরা আগামীতে বোরো চাষে আগ্রহ হারাবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ৩০ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৫ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে। অন্যদিকে এর আগের মৌসুমে ৩০ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৭৪ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদন হয়। আবাদ করা ফসলের মধ্যে ৪ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ২৫ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে উফশি জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন জানান, বোরো মৌসুমের শেষেই আমি ফেনীতে যোগদান করেছি। তবে কৃষকদের সহায়তায় কৃষি বিভাগ সব সময় মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। কৃষক যদি যথাযথ প্রক্রিয়ায় বীজ নির্বাচন করে এবং সুষম প্রক্রিয়ায় জমিতে সার প্রয়োগ করে তাহলে অনেক রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পাবে। এতে কৃষকের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনাও থাকবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কান্তি সেন বলেন, বোরো মৌসুমে উফশি জাতের ধানে গড় ফলন হয়েছে তিন দশমিক সাত মেট্রিক টন এবং হাইব্রিড জাতে গড় ফলন হয়েছে চার দশমিক সাত মেট্রিক টন।

কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করে কৃষি বিভাগের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মো. ইউছুপ নামে পরশুরামের বীরচন্দ্রনগরের আরেক কৃষক বলেন, কৃষি বিভাগ শুধু কিছু প্রণোদনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করতে চায়। ফসল ক্ষতির সময় মাঠেই তাদের পায়ই না আমরা। সব সময় বাজারের দোকান থেকে কথা বলে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করি।

কৃষকের অভিযোগ প্রসঙ্গে পরশুরাম পৌর এলাকায় দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাঞ্জন বণিক ইতোপূর্বে জানিয়েছিলেন, পৌর এলাকায় দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।  উপজেলা কৃষি বিভাগে জনবল সংকট থাকলেও নিয়মিত মাঠপর্যায়ে কৃষকদের এ রোগের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং করণীয় সম্পর্কে দল ভাগ করে এলাকাভিত্তিক নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, কৃষকের নানামুখী উন্নয়নে এবং সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগ পাশে আছে। দেশের কৃষিখাত এগিয়ে নিতে সরকার নিয়মিত প্রণোদনা দিচ্ছে।

এ খাত আরও সমৃদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২২
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।