সাতক্ষীরা: সচরাচর গরু আর মহিষ দিয়ে হাল চাষের দৃশ্য চোখে পড়লেও এবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ও ধুলিহরে দেখা গেছে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের দৃশ্য।
হালের গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম কম হওয়ায় দুটি ঘোড়া কিনে স্থানীয়দের ফসলের ক্ষেতে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের নুনগোলা গ্রামের রুহুল আমিন।
ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে জীবিকা অর্জনকারী নুনগোলা গ্রামের রুহুল আমিন বলেন, ৪ বছর আগে আমি দুটি ঘোড়া ৪১ হাজার টাকা দিয়ে কিনি। কিছুদিন পর ঘোড়ার একটা বাচ্চা হয়। আমার ঘোড়া দেখে এলাকায় ৪-৫ জন চাষ করার জন্য ঘোড়া কিনেছেন।
তিনি বলেন, ঘোড়া দিয়ে মালামাল টানার চেয়ে চাষাবাদের কাজে রোজগার বেশি। ঘোড়া দিয়ে দিনে ২-৩ একর জমি মই দেওয়া যায়। আর আমরা প্রতি কাঠা জমি মই দিতে ৪০-৫০ টাকা নিয়ে থাকি। একর প্রতি নেওয়া হয় ৭০০-৮০০ টাকা। আর জমিতে হাল দিয়ে মই দিতে প্রতি কাঠার জন্য ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। দিনে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পাই। এতে আমাদের দিনে ভালাই কামাই হয়।
ঘোড়া দিয়ে জমি হাল চাষকারী আছাদুল বলেন, বর্তমান বাজারে একজোড়া হালের গরুর দাম দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম কম। তাই আমি এক জোড়া ঘোড়া ২৮ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি এবং বর্তমানে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করি। ঘোড়ার শক্তিও বেশি। ঘোড়া দিয়ে তাড়াতাড়ি ও সুন্দরভাবে হাল চাষ করা যায়। আমি নিজের জমি চাষের পাশাপাশি অন্যের জমিও টাকার বিনিময়ে চাষ করে দেই। এতে করে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আয় হয়। প্রতিদিন ঘোড়ার খাবার বাবদ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হয়।
স্থানীয় কৃষক মহাসিন বিশ্বাস বলেন, আমাদের এলাকায় বড় কোনো গরু বা ষাঁড় নেই। তার জন্য ঘোড়া দিয়ে আমাদের জমিগুলোতে মই দিতে হয়। ঘোড়া দিয়ে মই দিলে ঘোড়াওয়ালা প্রতি বিঘার জন্য ২০০ টাকা নেয়। যেসব জায়গায় কলের লাঙল দিয়ে চাষ করা সম্ভব না, সেখানে আমরা ঘোড়া দিয়ে চাষ করাই।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
এমএমজেড