ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

আসছে পাঠক, আসছে নতুন বই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
আসছে পাঠক, আসছে নতুন বই বইমেলায় ২য় দিনের একটি দৃশ্য। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বাঙালির প্রাণের মেলা বইমেলা। ঐতিহ্যের পরম্পরায় এবারও শুরু হয়েছে সেই আয়োজন।

করোনা মহামারি পেরিয়ে আবারও নতুন-পুরোনো বইয়ের ঘ্রাণে মেতে উঠেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ নতুন বই এখনও আসেনি। তবে পাঠক-দর্শনার্থীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে অমর একুশে বইমেলায়। স্টল মালিকরাও পুরোনো বইয়ের সঙ্গে সদ্য আসা গুটিকয়েক নতুন বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন স্টলে।

পাঠকেরা এখনও পুরোনো বইয়ের পাতা ওল্টানোর মধেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন নিজেদের। অনেকে স্টলে স্টলে ঘুরে খোঁজ নিচ্ছেন নতুন বইয়েরও।

সাইফুল ইসলাম নামে এক পাঠক বলেন, মেলার প্রথম সপ্তাহ তো পুরোনো বই দেখেই সময় কাটে। এই সময়টাতে নতুন বই খুব কমই পাওয়া যায়। আবার যেগুলো আসে, সেগুলো হুট করে কেনাও যায় না মান যাচাই না করে। তাই নতুন বইয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা গড়ে ওঠে মূলত মেলার কয়েকটা দিন পার হলে।

এ বিষয়ে একাধিক প্রকাশনা সংস্থা জানায়, এখন তো পাঠক শুধু বই হাতে নিয়ে দেখছেন, নতুন বইয়ের তালিকা সংগ্রহ করছেন। বই বিক্রি এখন অল্প পরিমাণে হলেও কয়েকদিনের মধ্যেই তা বেড়ে যাবে বলে আশা করছি। আর ততদিনে মেলায় চলে আসবে আরও নতুন নতুন বই।

এদিকে অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় দিন মেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ২১টি।

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলা লোকসাহিত্যে হাটুরে কবিতা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিলু কবীর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বেলাল হায়দার পারভেজ, আহমেদ মাওলা এবং তানভীর আহমদ সিডনী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।

প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলা লোকসাহিত্য আনেক বৈশিষ্ট্যের কবিতা এবং গান আছে। ‘হাটুরে কবিতা’ এর মধ্যে অন্যতম। হাটুরে কবিতা যে কোনো বিবেচনায় উত্তীর্ণমানের এক ধরনের লোককবিতা। হাটুরে কবিতার প্রচলন এখন নেই তবে তাকে নিয়ে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ, এর ভেতর আমাদের অতীত মূল্যবোধ এবং সমাজচিত্র অবলোকন করা সম্ভব। তাই  লোকমানুষ, সমাজ এবং রাষ্ট্রকল্যাণের স্বার্থে হাটুরে কবিতার দিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।

আলোচকরা বলেন, হাটুরে কবিতা মূলধারার সাহিত্য কিংবা সংস্কৃতিতে মূল্য না পেলেও এর ঐতিহাসিক ও সামাজিক মূল্য অনেক। সমষ্টি-মানুষের চিন্তাধারার প্রকাশ যে সমস্ত বঙ্গীয় লোক-উপাদানে ঘটেছে, হাটুরে কবিতা তাদের অন্যতম। তাই বাংলার সামগ্রিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে গেলে হাটুরে কবিতাকে অবশ্যই আলোচনায় রাখতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, লোক উপাদান নিয়ে আলোচনায় হাটুরে কবিতার প্রসঙ্গ এলেও আমাদের মূল ধারার সাহিত্যালোচনায় এ বিষয়ক আলোচনা সমালোচনার পরিসর তেমন একটা নেই। তবে হাটুরে কবিতা যেহেতু তৃণমূলের লোকমানসের কাব্যিক প্রকাশ, তাই অতীতের লোক-মনস্তত্ত্ব অনুধাবনে হাটুরে কবিতা নিয়ে গবেষণার প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন লেখক আখতার হোসেন, মুহাম্মদ শামসুল হক, ফারুক মাহমুদ এবং পারভেজ হোসেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি আসাদ মান্নান, নাসির আহমেদ, মাহবুব আজিজ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম, লায়লা আফরোজ এবং ফয়জুল্লাহ সাঈদ।  

পুথিপাঠ (হাটুরে কবিতা) করেন পাবনার শিল্পী ফকির আবুল হোসেন। সংগীত পরিবেশন করেন মহিউজ্জামান চৌধুরী, তিমির নন্দী, রুমানা ইসলাম, তানজিনা করিম স্বরলিপি এবং আজমা সুরাইয়া শিল্পী।

আজ (শুক্রবার) অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিন মেলা শুরু হয়েছে সকাল ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। ছুটির দিন থাকায় মেলায় বইপ্রেমীর সংখ্যা বাড়বে পারে আজ। আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মেলায় শিশুপ্রহর চলবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
এইচএমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।