ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ডিআরইউ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন কবি হাসান হাফিজ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
ডিআরইউ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন কবি হাসান হাফিজ ছবি:শোয়েব মিথুন- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

প্রথমবারের মতো চালু হওয়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি হাসান হাফিজ। রোববার (২০ নভেম্বর) ডিআরইউ সাগর-রুনি মিলনায়তনে তাকে ‌ পুরস্কার দেওয়া হয়।

ঢাকা: প্রথমবারের মতো চালু হওয়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি হাসান হাফিজ।

রোববার (২০ নভেম্বর) ডিআরইউ সাগর-রুনি মিলনায়তনে তাকে ‌ এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

এর আগে জুরি বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম তার নাম ঘোষণা করেন।

‘অভিমান, মৃত্যু ও পাথর’ গ্রন্থের জন্যে এ পুরস্কার পেলেন কবি হাসান হাফিজ। কবির হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ।

তিনি বলেন, সাংবাদিকতার মূল হচ্ছে তথ্য। কিন্তু তথ্যের মধ্যে যে শেকড় আছে, সেটা হলো সাহিত্য। আর পুরস্কার হলো এমন এক জিনিস, যা না পাওয়া পর্যন্ত এর মর্ম বোঝা যায় না। এটা হলো ফুলের উপর বসার আগ পর্যন্ত করা ভ্রমরের গুঞ্জন।

‘কিন্তু পাওয়ার পর এর আর কোনো মূল্য থাকে না। এর অর্থ তারাই ভালো বোঝেন, যারা পুরস্কার পাচ্ছেন না। ’

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘পুরস্কার অনেক পরিশ্রমের ফল। এটা কাজের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। তবে যে কাজে আনন্দ নেই, সে কাজে যেমন পুরস্কার আসে না, তেমনি কেবল পুরস্কারের লোভে কাজ করেও তা পওয়া যায় না। তাই কাজ করতে হবে আনন্দের মাধ্যমে। এতে পুরস্কার এলেও আসতে পারে। ’

‘আর না এলেও আনন্দটা রয়ে যাবে। তাই আজ যিনি পুরস্কার পেয়েছেন, তিনি যেমন অভিনন্দিত হবেন, তেমনি যারা তা পাননি, তারাও সমান অভিনন্দন পাবেন। কেননা, তারা সবাই একই আনন্দের পথে হেটেঁছেন,’ বলেন তিনি।

তরুণদের উদ্দেশ্যে প্রবীণ এ অধ্যাপক বলেন, ‘এখন যারা মারা যাচ্ছেন অর্থাৎ প্রবীণ, তাদের উত্তরসূরী আমি তরুণদের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি না। কেবল কোম্পানিরওয়ালাদের মধ্যেই তরুণ তরুণ বলে উচ্ছ্বাস দেখছি। কেননা, তরুণদের উচ্ছলিত রক্ত কোম্পানিগুলোর খুব পছন্দ। কিন্তু রক্ত থিতিয়ে গেলে এরা তাদের ছুড়ে ফেলে দেয়। ’

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, তারুণ্যের এ অবস্থার জন্য প্রবীণেরাই দায়ী। এখন যারা প্রবীণ তাদের মধ্যে উদাহরণ তৈরি করতে দেখা যাচ্ছে না। সব কিছু কেবল তরুণদের পক্ষ থেকে অর্জন করা সম্ভব নয়। তাদের পথ দেখাতে হবে। এ পথ দেখানোর কাজ করবেন অভিজ্ঞ প্রবীণেরা। বক্তৃতা নয় নিজের জীবনাচরণ দিয়ে তারুণ্যকে আকর্ষণ করতে হয়। আমাদের সমাজে এমন উদাহরণ আর দেখছি না।

‘এখন যা দেখা যায় তা হলো, টাকা বানানোর কৌশল। কিন্তু যা কেবল মেধা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত হয়, তার দেখা মেলা ভার হয়ে গেছে। ’

অনুষ্ঠানে কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, নিজেদের এগিয়ে নেওয়ার যে চেষ্টা, তা বাঙালিদের মধ্যে একদম নেই। কারণ আমরা চরম পরশ্রীকাতর জাতি। এই যখন অবস্থা, তখন ডিআরইউ নিজেদের সদস্যদের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ এ পুরস্কারের মাধ্যমে সহকর্মীদের উৎসাহ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। যা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।

সাহিত্য পুরস্কার জুরি বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, দলীয় রাজনীতির বাইরে থেকে ডিআরইউ যে কাজ করছে, তা সমাজের জন্যও উৎসাহব্যাঞ্জক। এ কারণেই প্রতিষ্ঠানটির সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে লেখক ও সাংবাদিক মাহাবুব আলম, ডিআরইউ সভাপতি জামাল উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাফি কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬/আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা
আরএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।