আমি এখনও নিশ্চিত নই আমার স্ত্রীকে বেকারি হামলার কথাটি বলে সঠিক কাজ করেছিলাম কিনা। কিন্তু তখন হয়তো সঠিক ও বেঠিকের কোনো প্রশ্ন ছিলো না।
ব্যাপারটাকে যদি আপনি এইভাবে দেখে থাকেন তো ঘটনাটা ছিলো এই, আমি স্রেফ আমার স্ত্রীকে বেকারি হামলার কথা বলে দিয়েছিলাম। কথাটা পাড়ার আমার কোনো পরিকল্পনা ছিলো না- এ ব্যাপারে আমি সবকিছুই ভুলে গিয়েছিলাম- কিন্তু এটি আবার এমন কোনো ব্যাপারও ছিলো না যে আপনি এর উল্লেখ করেছেন বলেই আমার তা মনে পড়ে গেলো।
আমাকে বেকারি হামলার কথা যে ব্যাপারটি মনে করিয়ে দিয়েছিল তা হচ্ছে অসহনীয় ক্ষুধা। ক্ষুধাটা অসহনীয় হয়ে উঠেছিল রাত দু’টোর আগেই। আমরা রাতের হালকা খাবার সেরে নিয়েছিলাম ছ’টার সময়, সাড়ে ন’টায় বিছানায় গিয়েছিলাম এবং ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কোনো কারণে ঠিক তখনই ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। এর অল্প কয়েক মিনিট পরে ক্ষুধাটা মোচড় দিয়ে উঠেছিল টর্নেডোর শক্তি নিয়ে, ঠিক যেভাবে বিখ্যাত শিশু চলচ্চিত্র দ্য উইজার্ড অব ওজে ছবিতে জাদু করে ঘর পালানো ডরোথিকে টর্নেডোর বেগে ঘরে ফেরানো হয়েছিল। এই নচ্ছার ক্ষুধার যন্ত্রণাগুলো এক সাংঘাতিক ব্যাপার!
আমাদের ফ্রিজে এমন কিচ্ছু ছিলো না যাকে ঠিক খাবারের তালিকায় ফেলা যায়। ছিলো এক বোতল ফ্রেঞ্চ ড্রেসিং (সালাদে ব্যবহার করা হয়), ছয় ক্যান বিয়ার, দু’টি কুঁচকে যাওয়া পেঁয়াজ, এক চিলতে মাখন এবং ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার এক বাক্স ডিওডোরাইজার। মাত্র দুই সপ্তাহের বিবাহিত জীবন আমাদের, দাম্পত্য বোঝাপড়ায় সংক্ষিপ্ত খাদ্যাভ্যাস তখনও গড়ে ওঠেনি। অন্যকিছুর কথা তো বাদই দিলাম!
আমি তখন একটি আইনি সহায়তা সংস্থায় চাকরি করতাম, আর সে একটি ডিজাইন স্কুলে সাচিবিক কাজ করতো। আমার বয়স তখন আটাশ কী ঊনত্রিশ- ধুর ছাই! কেন যে মনে করতে পারি না ঠিক কোন বছরে আমরা বিয়ে করেছিলাম! আর সে ছিলো আমার চেয়ে দু’বছর আট মাসের ছোট। আমাদের ভাবনায় সব শেষে যা থাকতো তা হচ্ছে, মুদি দোকানের মালামাল।
আমরা দু’জনেই এতোটাই ক্ষুধার্ত ছিলাম যে ফের ঘুমিয়ে পড়তে পারছিলাম না, ঘুমাতে গেলেই চাগিয়ে উঠছিল ক্ষুধাটা। আবার ক্ষুধার জ্বালায় দরকারি অন্য কোনো কাজও করতে পারছিলাম না। অগত্যা আমরা বিছানা থেকে নেমে পড়লাম এবং রান্নাঘরে গেলাম, একজন আরেকজনের দিক থেকে পুরো টেবিলটা চক্কর মারলাম। এমন প্রচণ্ড ক্ষুধার যন্ত্রণার কারণটা কী হতে পারে?
খুব আশা নিয়ে আমরা পালা করে বারবার ফ্রিজের দরজা খুলছিলাম, কিন্তু যতোবারই ভেতরে তাকাই না কেন, ফ্রিজের ভেতরের জিনিস আর কখনও বদলায় না। বারবার সেই একই জিনিস দেখতে পাই- বিয়ার এবং পেঁয়াজ এবং মাখন এবং ফ্রেঞ্চ ড্রেসিং এবং ডিওডোরাইজার। মাখনে হয়তোবা কোঁচকানো পেঁয়াজ দু’টি সাঁতলে নেওয়া সম্ভব, কিন্তু ওই দু’টো পেঁয়াজে আমাদের পেট ভরার কোনো সম্ভাবনাই নেই। পেঁয়াজ হচ্ছে অন্যকিছুর সঙ্গে খাওয়ার জিনিস। মোটেও তা ক্ষুধা মেটানোর মতো কোনো খাবার নয়।
‘ম্যাডাম কি ডিওডোরাইজারে খানিকটা ফ্রেঞ্চ ড্রেসার সাঁতলে নিয়ে খেতে আগ্রহী?’
আমি চাইছিলাম সে আমার এই খোঁচা মেরে ঠাট্টা করার চেষ্টাকে পাত্তা না দিক, এবং সে তা-ই করল। ‘চলো গিয়ে গাড়িতে উঠে বসি এবং সারারাত খোলা থাকে এমন কোনো রেস্তরাঁ খুঁজে বের করি’, আমি বলে উঠলাম। ‘মহাসড়কে একটা না একটা এমন রেস্তরাঁ থাকবেই। ’
আমার এ প্রস্তাবটি সে নাকচ করে দিলো। ‘আমরা তা পারি না। এই মাঝরাতের পর আমাদের খাওয়ার জন্য বাইরে যাওয়ায় কোনো ফায়দা হবে বলে মনে হয় না। ’ এদিক দিয়ে সে প্রাচীনপন্থী।
আমি একবার নিঃশ্বাস ফেলে বললাম, ‘আমারও তা মনে হয় না’।
আমার স্ত্রী যখনই কথার পিঠে এই ধরনের মতামত (বা তত্ত্ব) প্রকাশ করে তখনই আমার কানে তা কর্তৃত্ব ফলানোর কোনো গুপ্ততথ্য ফাঁসের বার্তা হয়ে প্রতিধ্বনি তুলতে থাকে। হয়তো নববিবাহিতদের বেলায় এমনটাই ঘটে থাকে, আমি ঠিক জানি না। কিন্তু সে যখন আমাকে এ কথা বললো তখন আমি ভাবতে শুরু করে দিলাম যে, এটি হচ্ছে বিশেষ ধরনের ক্ষুধা, কেবল মহাসড়কের সারারাত্রি খোলা থাকা রেস্তরাঁয় গিয়ে এ ক্ষুধা মেটানো সম্ভব নয়।
একটি বিশেষ ধরনের ক্ষুধা। এবং তা কী হতে পারে?
আমি এখানে তা সিনেমার দৃশ্যের মতো উপস্থাপন করতে পারি।
এক, আমি একটি ছোট্ট নৌকোয়, ভাসছি এক শান্ত সাগরে। দুই, আমি নিচে তাকালাম এবং তাকালাম পানির দিকে, আমি সেখানে দেখতে পেলাম একটি আগ্নেয়গিরির চূড়া উঠে আসছে মহাসাগরের তলা থেকে। তিন, চূড়াটিকে পানির উপরিতলের খুব কাছাকাছি মনে হচ্ছে, কিন্তু ঠিক কতোটা কাছাকাছি তা আমি বলতে পারবো না। চার, এমনটি দেখাচ্ছে কারণ পানির অতিস্বচ্ছতা দূরত্বের ধারণায় বাগড়া দিচ্ছে।
আমার স্ত্রী যখন সারারাত খোলা থাকা মহাসড়কের রেস্তরাঁয় যেতে অস্বীকৃতি জানালো এবং ‘আমার তা মনে হয় না’ বলে আমি যখন তার সঙ্গে একমত হলাম, এর দুই কী তিন সেকেন্ডের ভেতর আমার মনে যে ছবি ফুটে উঠেছিল এটি হচ্ছে, তার এক চমৎকার বর্ণনা। আমি নিশ্চয়ই সিগমন্ড ফ্রয়েড ছিলাম না যে ঠিক ঠিক বিশ্লেষণ করে বলে দিতে পারবো এই ছবির মানেটা কী, কিন্তু অন্তর্জ্ঞান থেকে আমি জানতাম যে, এটা হচ্ছে এক গুপ্ততথ্য ফাঁস। এটাই হচ্ছে সেই কেন- যার জন্য যদিও আমি প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত ছিলাম- তার পরও আপনা আপনিই তার তত্ত্বে (বা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়ায়) সম্মত হয়েছিলাম।
আমরা একমাত্র যে কাজটি করতে পারতাম তা-ই করলাম: বিয়ারের ক্যানগুলো খুললাম। সে বিয়ার খুব একটা পছন্দ করে না, তাই আমরা বিয়ার-ক্যানগুলো এইভাবে ভাগ করে নিলাম- তার জন্য দু’টি, আমার জন্য চারটি। আমি যখন প্রথম ক্যানটি খুলে বিয়ার পান করছিলাম সে তখন রান্নাঘরের তাকগুলো হাতড়াচ্ছিল ঠিক নভেম্বর মাসের কোনো কাঠবেড়ালির মতো। শেষমেশ সে একটি প্যাকেট পেয়ে গেলো, যেটির তলায় ছিলো চারটি বাটার কুকিজ। এগুলো ছিলো উচ্ছিষ্ট, নরম এবং ভেজা, কিন্তু আমরা দু’জনে তাই খেয়ে নিলাম দু’টি করে, এর প্রতিটি গুঁড়ো টুকরোও কুড়য়ে কুড়িয়ে খেলাম খুব মজা করে।
এতে কোনো কাজ হলো না। সীমাহীন সিনাই উপদ্বীপের মতোই বিশাল মাপের ক্ষুধা লেগেছিল আমাদের, সেখানে বাটার কুকিজ আর বিয়ার কোথায় যে হারিয়ে গেলো তার কোনো পাত্তাই পাওয়া গেলো না।
ধীরে ধীরে সময় মিলিয়ে যেতে থাকলো অন্ধকারে, ঠিক যেমন করে মাছের পেটের ভেতরে এক টুকরো সিসা ক্ষয়ে ক্ষয়ে ওজন হারাতে থাকে। আমি অ্যালুমিনিয়ামের বিয়ার-ক্যানের অক্ষরগুলো পড়ে নিলাম। এরপর আমার ঘড়ির দিকে তাকালাম। ফ্রিজের দরজাটার দিকে তাকালাম। কালকের পত্রিকার পাতাগুলো ওল্টালাম। একটা পোস্টকার্ড দিয়ে টেবিলের ওপর পড়ে থাকা কুকিজের গুঁড়োগুলো তুলে পরিষ্কার করলাম।
‘সারা জীবনেও আমার এত্তো ক্ষুধা লাগেনি’, সে বলে উঠলো। ‘ভেবে অবাক হচ্ছি বিয়ে করেছি বলেই আবার এমনটি হলো না তো!’
‘হবেও-বা’, আমি বললাম। ‘বা তা নাও হতে পারে। ’
সে যখন খাবারের টুকরো খুঁজছিল, আমি তখন আমার নৌকার কিনারে ঝুঁকলাম এবং পানির নিচের আগ্নেয়গিরিটির চূড়ার দিকে তাকালাম। নৌকার চারপাশে মহাসাগরের পানির স্বচ্ছতা আমার ভেতরে এক অরাজক অনুভূতি এনে দিলো, যেনো আমার পেটের ভেতরের স্নায়ুজালিকার পেছনে কোথাও একটি ফাঁপা জায়গা খুলে গেছে- শক্ত করে মুখবদ্ধ এক ফাঁপা গুহা, যেখানে ঢোকারও পথ নেই, বেরুনোরও পথ নেই। অনুপস্থিতির এ এক অদ্ভুত অনুভূতি- অস্তিত্বহীনতার অস্তিত্বের এই অনুভূতি- আপনি যখন ক্রমেই সরু হতে থাকা কোনো পর্বতচূড়ার একেবারে ওপরে উঠে যাবেন ঠিক তখনকার ভয়ে বিহ্বল হয়ে পড়ার মতোই। ক্ষুধা এবং ভীষণ উচ্চতাভীতির মধ্যে এই যোগসূত্র ছিলো আমার জন্য এক নতুন আবিষ্কার।
ঠিক এই ধরনেরই আমার এক পূর্ব-অভিজ্ঞতার মতোই ছিলো এটি। তখনও আমার পেট ঠিক এই রকমই খালি ছিলো... কখন?... ওহ্, নিশ্চয়ই তাই... সেটি ছিলো...
‘বেকারি হামলার সময়’, আমি নিজেকে বলতে শুনলাম।
‘বেকারি হামলা? তুমি কী নিয়ে বলছ?’
এবং এভাবেই তা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
‘আমি একবার এক বেকারিতে হামলা চালিয়েছিলাম। অনেক দিন আগে। বেকারিটি খুব একটা বড় ছিলো না। বিখ্যাতও ছিলো না। সেখানকার রুটিগুলো বিশেষ রকমের কিছু একটাও ছিলো না। খারাপও ছিলো না। দোকানগুলোর ব্লকের মাঝে পাশাপাশি বেশ কয়েকটা ছোট্ট বেকারির একটি ছিলো এটি। একজন বুড়ো লোক এটি চালাত, যে কিনা নিজেই সবকিছু করতো। সকালে সে রুটি সেঁকত এবং সেগুলো বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর সেদিনকার মতো সে তার বেকারি বন্ধ করে দিত। ’
‘বেকারিতেই যদি হামলা করতে গেলে তবে ওই বেকারিটিতেই কেন?’
‘তো বেশ, শোনো তা হলে- বড় বেকারিতে হামলা চালানোর কোনো যুক্তি নেই। আমরা যা চাইছিলাম তা হচ্ছে রুটি, টাকা-পয়সা নয়। আমরা ছিলাম আক্রমণকারী, ডাকাত নই। ’
‘আমরা? এই আমরাটা কে কে?’
‘আমার তখনকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দশ বছর আগের কথা। আমরা তখন এতোটাই ফাঁকা পকেটের ছিলাম যে টুথপেস্টও কিনতে পারতাম না। কখনই পর্যাপ্ত খাবার পেতাম না। খাবারে হাত রাখার জন্য আমরা খুব সাংঘাতিক কিছু কাজ করতাম। এর একটি ছিলো বেকারি হামলা। ’
‘আমি ঠিক বুঝতে পারছি না’, আমার দিকে তাকিয়ে সে বললো। তার চোখ দু’টি হয়তো ভোরের আকাশে একটি ম্লান হতে থাকা তারা খুঁজছিল। ‘তুমি একটি চাকরি নিলে না কেন? স্কুল ছুটির পরও তো তুমি কাজ করতে পারতে। বেকারি হামলার চেয়ে তা বরং সহজ হতো। ’
‘আমরা কাজ করতে চাইতাম না। এ ব্যাপারে আমরা একেবারেই পরিষ্কার ছিলাম। ’
‘আচ্ছা বেশ, এখন তো তুমি কাজ করছো, কী, করছো না?’
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম এবং আরেক চুমুক বিয়ার খেয়ে নিলাম। এরপর চোখ কচলালাম। এক ধরনের থকথকে বিয়ার-কাদা চুইয়ে আমার মগজে ঢুকে গেলো এবং অসহনীয় ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই শুরু করে দিলো।
‘সময় বদলায়। মানুষ বদলায়’, বললাম আমি। ‘চলো আবার বিছানায় যাই। আমাদের আবার সকাল সকাল উঠে পড়তে হবে। ’
‘আমার ঘুম পাচ্ছে না। আমি চাইছি তুমি আমাকে সেই বেকারি হামলার কথা বলো। ’
‘বলার মতো কিছু নেই। এটা যুদ্ধ-টুদ্ধ ধরনের কিছু ছিলো না। কোনো উত্তেজনাও ছিলো না। ’
‘এটি কি সফল হয়েছিল?’
আমি ঘুমের আশা ছেড়ে দিলাম এবং আরেকটা বিয়ারের ক্যান খুলে ফেললাম। একবার যখন এই কাহিনী শোনার জন্য উৎসাহী হয়ে উঠেছে, তাকে এর পুরোটাই শুনতে হবে- সে এমন ধাতেরই মেয়ে!
‘হ্যাঁ, এটিকে এক ধরনের সফলই বলা যায়। আবার এক ধরনের অসফলও বলা যায়। আমরা যা চেয়েছিলাম তা পেয়েছিলাম। কিন্তু দস্যুতা হিসেবে এটি কোনো কাজে আসেনি। আমরা ছিনিয়ে নেওয়ার আগেই বেকারির মালিক আমাদের রুটি দিয়ে দিয়েছিল। ’
‘মাগনা?’
‘না, ঠিক মাগনা নয়। সেটাই হচ্ছে আসল কথা। ’ আমি মাথা ঝাঁকালাম। ‘বেকারির মালিক ছিলো উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের পাগল এবং আমরা যখন সেখানে যাই সে তখন ওয়াগনারের একটি অ্যালবামের বন্দনা অংশ শুনছিল। আমাদের সঙ্গে সে একটি চুক্তি করে ফেলল। আমরা যদি এই রেকর্ডের পুরো অংশ শুনি তা হলে আমরা আমাদের ইচ্ছেমতো রুটি নিতে পারবো। আমি এ নিয়ে আমার বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করলাম এবং আমরা শারীরিক অভিব্যক্তিতে জানিয়ে দিলাম যে আমরা রাজি। শব্দের শুদ্ধতম মানে করে বললে বলা চলে এটি কোনো কাজ করতো না এবং তা কাউকে আঘাতও করতো না; সুতরাং আমরা আমাদের চাকু ভাঁজ করে পকেটে রাখলাম। দু’টো চেয়ার টেনে আনলাম এবং তানহাউসার ওদ্য ফ্লাইং ডাচম্যানের বন্দনা বা প্রারম্ভিকা শুনলাম। ’
‘আর তারপর তোমরা রুটি পেলে?’
‘ঠিক বলেছো। তার দোকানে যতোগুলো রুটি ছিলো তার প্রায় সবই। আমাদের ব্যাগের ভেতরে ঠেসেঠুসে ভরে ওগুলো বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। এতে আমাদের চার কী পাঁচদিনের খাবারের ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল। ’ আরেক চুমুক বিয়ার খেয়ে নিলাম। সাগরতলের ভূমিকম্প থেকে উঠে আসা নিঃশব্দ ঢেউয়ের মতো আমার তন্দ্রালুতা আমার নৌকোটিকে এক দীর্ঘ ও আলতো ধাক্কা মারলো।
‘অবশ্যই আমরা আমাদের মিশন শেষ করেছিলাম। আমরা রুটি পেয়েছিলাম। তাই বলে তুমি বলতে পারবে না যে আমরা কোনো অপরাধ করেছিলাম। এটি একটি বিনিময়ের চেয়েও বেশিকিছু ছিলো। আমরা তার সঙ্গে ওয়াগনারের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের রেকর্ড শুনেছিলাম এবং এর বিনিময়ে আমরা রুটি পেয়েছিরাম। আইনগতভাবে বলতে গেলে, এটি বরং একটি বাণিজ্যিক লেনদেনের মতোই ছিলো। ’
চলবে...
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৭
এসএনএস