রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে জাদুঘর চত্বরে ‘লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব’ শীর্ষক এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
উদ্বোধনের পর প্রথম দিনেই মানুষের ঢল দেখা গেছে উৎসবে।
উদ্বোধনকালে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বর্তমান সরকার লোকশিল্পের উন্নয়নে কাজ করছে। পানাম নগরীকে অতিদ্রুতই আধুনিকায়ন করা হবে। তাছাড়া পানাম নগরীর ৫২টি ঐতিহাসিক ভবন সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের সন্তানদের শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতি চর্চার সমন্বয় ঘটাতে হবে। সমাজে মানবিকতার বিকাশ ঘটাতে হবে।
২০০৪ সালেও দেশে মানুষ না খেয়ে মারা গিয়েছিল উল্লেখ করে সংস্কৃতিমন্ত্রী দাবি করেন, আজকে মানুষ আর না খেয়ে মারা যাচ্ছে না। উত্তরবঙ্গের মঙ্গার মানুষও না খেয়ে থাকতো একসময়। আজকে সেই মঙ্গার মানুষের হাতে হাতে মোবাইল। যারা একসময় না খেয়ে থাকতো, তারা আজকে উন্নত প্রযুক্তির মোবাইল ব্যবহার করছে, মোবাইলে টাকা খরচ করছে।
সন্ধ্যায় মেলায় আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। মেলার দর্শনার্থী ও সাধারণ মানুষ এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, মেলায় কারুশিল্প এবং অন্যান্য প্রদর্শনীর জন্য ১৮০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন পল্লী অঞ্চল থেকে আগত কারুশিল্পীরা মেলায় অংশ নিচ্ছেন।
এর মধ্যে নওগাঁ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি ও মুখোশ, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি, ঘোড়া, পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশীকাঁথা, বেতের কারুশিল্প, মুন্সীগঞ্জের শীতল পাটি, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও সিলেটের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্পসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার মৃৎশিল্প বিভাগের মাটির কারুশিল্প এ মেলায় স্থান পাচ্ছে।
মেলায় গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম ‘মৃৎশিল্পের প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন’ শিরোনামে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। ঢাকাসহ কয়েকটি অঞ্চলের শিল্পীরা এ প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন।
এছাড়াও এ উৎসবে লোকজ নাটক, লোক কাহিনীর যাত্রাপালা, বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাসন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গায়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি অনুষ্ঠানও থাকছে।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট নূরজাহান, সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোনারগাঁও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গণি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এইচএ/