ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

গ্যালারি চিত্রকে শুরু রশীদ চৌধুরীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
গ্যালারি চিত্রকে শুরু রশীদ চৌধুরীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, শিল্পীসহ অন্য/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশে শিল্পচর্চার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা ও মৌলিকতায় রশীদ চৌধুরী ছিলেন সর্বজন স্বীকৃত। প্রচলিত ফর্ম ভেঙে নতুন করে ফর্ম গড়া, ট্যাপেস্ট্রিতে লোকজ ফর্মের মিশেল ও একইসঙ্গে উত্তর আধুনিকতার স্পর্শ তাকে এ মাধ্যমে পথিকৃৎ শিল্পীতে পরিণত করেছিল। 

বাংলাদেশের চিত্রকলার ইতিহাসে অন্যতম এ শিল্পীর শিল্পকর্ম নিয়ে গ্যালারি চিত্রকে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী। রোববার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ১৪ দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলায় ছবি আঁকার চেষ্টা করতাম। তার সঙ্গে পরিচয় হয়নি কখনো। তবে সংসদ ভবনে গিয়ে রশীদ চৌধুরীর কাজ প্রথম দেখি। পরে এ শিল্পী সম্পর্কে জানতে পারি। তার শিল্পভুবন যে শিল্পীকে অনুপ্রেরণা জোগাবে, সন্দেহ নেই।

শিল্পকর্মে নস্টালজিয়া ও রোম্যান্টিকতার মিশ্রণে চিরায়ত বাংলার দৃশ্যপট সম্পূর্ণ নতুন করে নির্মাণ করেছেন শিল্পী। পাশ্চাত্যের আধুনিক শৈলীর প্রয়োগে একদিকে যেমন এঁকেছেন বিমূর্ত চিত্রকলা, অন্যদিকে পাট-রেশমের মিশ্রণে বুনন শিল্প (ট্যাপেস্ট্রি) নির্মাণ তাকে বাংলাদেশের চিত্রকলার ইতিহাসে অনন্য স্থান দিয়েছে। জীবনের শেষ দশ বছর ইসলামী ক্যালিওগ্রাফি এবং অন্য সাংস্কৃতিক প্রভাব তার শিল্পকর্মে রূপায়িত হতে দেখা গেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন রশীদ চৌধুরীর ছোট ভাই মেজর (অব.) জুলফিকার এইচ চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী। সঞ্চালনা করেন গ্যালারি চিত্রকের পরিচালক শিল্পী মো. মুনিরুজ্জামান।

শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, তিনি আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। তবে শুধু ক্লাসে নয় তার শিল্পজীবন থেকে অবিরত শিক্ষা নিয়েছি আমি। ট্যাপেস্ট্রি শিল্পকর্মে রশীদ চৌধুরী সারাবিশ্বের বিচারে প্রথম সারির শিল্পী। পঞ্চাশের দশকে বাঙালি রেনেসাঁর যে উদ্ভব ঘটেছিল রশীদ চৌধুরী ও তার বন্ধুরা ছিলেন অগ্রগণ্য। কাইয়ুম চৌধুরী, ইমদাদ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মুর্তজা বশীর, রশীদ চৌধুরী এরা প্রত্যেকেই একসঙ্গে ঢাকা আর্ট কলেজে লেখাপড়া করেছেন। এরা প্রত্যেকেই পরে বাংলাদেশের বড় শিল্পী হিসেবে স্বীকৃত।

রশীদ চৌধুরী ছিলেন একজন পরিপূর্ণ শিল্পী। তিনি খুব দ্রুত তার প্রকাশ মাধ্যম পরিবর্তন করতেন। সাহিত্যচর্চাও করেছেন। তার কিছু হৃদয়গ্রাহী কবিতা আছে; আছে জাক্ প্রেরভে এবং রবের দেস্নোস-এর অনুবাদ, যা তিনি মূল ফরাসি থেকে ভাষান্তরিত করেন। ষাটের দশকের শেষ দিকে তিনি তরুণ কবি-প্রকৌশলী-স্থপতিদের একটি দল নিয়ে বিদ্রোহাত্মক ‘না’ গ্রুপ সৃষ্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।

গ্যালারি চিত্রকের এ প্রদর্শনীতে শিল্পীর বিভিন্ন সময়ের আঁকা পেইন্টিং ও ট্যাপেস্ট্রি মিলিয়ে ৪২টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনী চলবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ধানমন্ডি-গ্রিন রোড, ৬ নম্বর সড়কে প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা উন্মুক্ত থাকবে সবার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।