ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সনজীদা খাতুনকে সংবর্ধনা 

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৮
সনজীদা খাতুনকে সংবর্ধনা  সংস্কৃতিসাধক সনজীদা খাতুনকে সম্মাননা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাঙালি সংস্কৃতি চর্চা সনজীদা খাতুনের সত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি একাধারে সংগীত শিল্পী, সংগীত-শিক্ষক, কবিতা ও গানের ব্যাখ্যাকারক ও বিশ্লেষক, তুলনাহীন সংগঠক। নিজ নীতি ও আদর্শে অবিচল থেকে তিনি সংস্কৃতিসাধনার অবিস্মরণীয় লড়াই করে গেছেন। 

বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সনজীদা খাতুনকে নিয়ে এভাবেই বলছিলেন আয়োজনের সভাপতি এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

মঙ্গলবার (০৩ এপ্রিল) বিকেলে সংস্কৃতি সাধক সনজীদা খাতুনের ৮৫তম জন্মবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

 

আয়োজনে অতিথি হিসেবে ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সৈয়দ হাসান ইমাম, শামসুজ্জামান খান, রামেন্দু মজুমদার, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সংস্কৃতিজন গোলাম কুদ্দুছ, বেগম আকতার কামাল, মফিদুল হক এবং সনজীদা খাতুনের পরিবারের পক্ষে তার দৌহিত্রী সায়ন্তনী ত্বিষা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সনজীদা খাতুন সংস্কৃতির জন্য লড়াই করেছেন, মানুষ তৈরির জন্য লড়াই করেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে একজন প্রিয় শিক্ষক, সাহিত্য জগতের একজন গুণী গবেষক, সংস্কৃতির মাঠে একজন লড়াকু যোদ্ধা।  

‘পাকিস্তানি মূঢ়তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্র জন্মশতর্বষ পালন থেকে শুরু করে বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বাংলা নববর্ষ উৎসব উদযাপন তাঁর জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তিনি রবীন্দ্র সাহিত্য ও সংগীতের নিপুণ ব্যাখ্যাতা; আবার একই সঙ্গে নজরুল, জসীম উদদীনসহ সমকালীন সাহিত্যেরও বিশ্লেষক। ’

তারা বলেন, সংস্কৃতি জগতে থেকেও প্রগতিশীল রাজনীতির নেপথ্যে প্রেরণাদাত্রী হিসেবে কাজ করেছেন সনজীদা খাতুন। আমাদের পরম সৌভাগ্য এ অনন্য সাধারণ সংস্কৃতিসাধকের কৃতির ছায়ায় ঋদ্ধ হয়ে চলেছি। কর্মমুখর জীবনের পঁচাশি পূর্তিতে বাংলা একাডেমির নেতৃত্বে নাগরিক সমাজের এ সংবর্ধনা তাঁর প্রতি গোটা জাতির ঋণ স্বীকার মাত্র।

শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারের কণ্ঠে ‘দাও হে হৃদয় ভরে’ গানের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর সনজীদা খাতুনের উদ্দেশ্যে শংসাবচন পাঠ করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরীয় পরিয়ে দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে উপহারসামগ্রী তুলে দেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং একাডেমির বই উপহার দেন মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

আয়োজনে একাডেমির পক্ষ থেকে সংবর্ধিতজন সনজীদা খাতুনকে ৮৫টি গোলাপের গুচ্ছ তুলে দেওয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী অদিতি মহসিন এবং লাইসা আহমেদ লিসা।  

সংবর্ধনা পেয়ে সনজীদা খাতুন বলেন, আজ যেভাবে আমাকে ভালোবাসা জানানো হলো তাতে আমি অভিভূত। জীবন চলার পথে আমি দ্বন্দ্ব ও ছন্দ উভয়কে স্বীকার করে নিয়েছি। আমি মনে করি জীবন আমাদের যেমন পর্যুদস্ত করে, তেমনি আমাদের জাগিয়েও তোলে।

এসময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সংস্কৃতমনা ব্যক্তিরা গুণী এ মানুষটিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। আয়োজনে সনজীদা খাতুন শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে ‘না বাঁচাবে আমায় যদি’ গানটি পরিবেশন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০২১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৮
এইচএমএস/এমএ 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।