রোববার (২৭ মে) জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় প্রকাশনা অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ।
জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক ও বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ড. এনামুল হক সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. শওকত নবী এবং অনুভূতি ব্যক্ত করেন বইটির লেখক মোহাম্মদ ইউসুফ সিদ্দিক।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত সব ইসলামিক শিলালিপি, এমনকী সেসব শিলালিপিসহ যেগুলোর পাঠোদ্ধার আগে করা হয়নি সেগুলোসহ তৈরি করা হয়েছে এ বর্ণনামূলক নিদর্শন তালিকা। এ শিলালিপি থেকে বাংলায় মুসলিম শাসনের ইতিবৃত্ত পাওয়া যায়। বইটিতে শুধু শিলালিপির লেখাগুলো অনুবাদই করা হয়নি, পাশাপাশি সে সময়ের মুসলিম সমাজ ও সময়ের সাথে তাদের পরিবর্তনও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
আলোচনায় অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুলতানি পর্বে প্রধানত ধর্মীয় স্থাপনা, যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা, সমাধি প্রভৃতির গায়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিলালিপি উৎকীর্ণ হয়েছিল। মুঘল পর্বে ধর্মীয় স্থাপনায় সংযুক্ত শিলালিপি ছাড়াও লৌকিক ইমারতে কিছু সংখ্যক শিলালিপি পাওয়া যায়। সুলতানি বাংলায় (১২০৪-১৫৩৮ খ্রি.) প্রাপ্ত শিলালিপি ছিল সাধারণত আরবিতে উৎকীর্ণ। ফারসি লিপির সংখ্যা ছিল খুবই কম। এ বইয়ে জাদুঘরে সংরক্ষিত সব শিলালিপির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। ফলে যে কোনো পাঠক সাবলিলভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন শিলালিপির অর্থ।
সভাপতি ড. এনামুল হক বলেন, মধ্যযুগের লিপিসাক্ষ্য প্রধানত স্থাপনার গায়েই পাওয়া গেছে। এসব স্থাপনার সিংহভাগ ছিল মসজিদ। স্থাপনাগুলোর বেশিরভাগ সরকারিভাবে নির্মিত হতো বলে শিলালিপিতে বক্তব্য প্রকাশের ধরনও ছিল প্রায় অভিন্ন। অধিকাংশ লিপি ছিল আরবি ও ফারসি ভাষায় লেখা। বাংলা লিপি ছিল হাতে গোনা। সমকালীন ইতিহাস গ্রন্থ না থাকায় মধ্যযুগের ইতিহাস পুনর্গঠনে এসব লিপিসাক্ষ্যের বিশ্লেষণ অপরিহার্য। এ বইয়ে বিষয়গুলো বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
এইচএমএস/এএ