শুক্রবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রহমান সেমিনার কক্ষে এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঢাকা লিট ফেস্ট উপলক্ষে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস: সংকট ও উত্তরণ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
আলোচকরা শুরুতেই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনার সংকট তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে টেরিটোরিয়াল (ভূখণ্ডগত), রিলিজিয়াস (ধর্মীয়) ও আইডোলিজক্যাল (মতাদর্শগত) বায়াসনেস বা পক্ষপাত। বাংলা সাহিত্যের পরিবর্তে মুসলিম সাহিত্যের ইতিহাস হওয়ায় পরবর্তীতে হিন্দু সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়টি সামনে চলে আসে। দীনেশ চন্দ্র, সুকুমার রায়, গোপাল হালদারের পরে বাংলা সাহিত্য নিয়ে আর উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ হয়নি। সিলেবাসে সমসাময়িক সাহিত্য অন্তর্ভুক্ত না থাকাকেও সংকট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
এই সংকট উত্তরণের উপায় বলতে গিযে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে একক ব্যক্তির পক্ষে কাজ করা কঠিন। রচিত হতে পারে যুগভিত্তিক ইতিহাস, লিখিত ও মৌখিক সাহিত্যের ইতিহাস। কিন্তু প্রশ্ন থাকবে এখন আমরা ওই মাত্রার গবেষক পাব কি না? অন্যদিকে এই গবেষণা করার জন্য যে আর্থিক সহযোগিতা দরকার সেই সহযোগিতাও অপ্রতুল। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনার জন্য কতটা পাওযা যাবে সেটাও প্রশ্নসাপেক্ষ বিষয়। তারপরেও আমাদের এগোতে হবে, আমাদের তরুণ লেখক, গবেষকরা এগিয়ে যাবে। সাহিত্যের এই সংকট উত্তরণের জন্য একটি জাতীয় দায়িত্ববোধ তৈরি হবে তাহলে এটি সম্ভব হবে। আমি আশাবাদী আমাদের তরুণ গবেষকরা এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। কারণ বাংলা ভাষা পৃথিবীর অনেক দেশে বিস্তৃত। আমাদের যৌথ নদী কমিশন আছে এখন যৌথ ভাষা কমিশন হতে পারে, যৌথ ইতিহাস পরিষদ হতে পারে। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে এটি সম্ভব, দুরূহ কাজ নয়। যুগভিত্তিক, মৌখিক সাহিত্য লিখে রাখার এখনই সময়। যত দেরি হবে তত হারিযে যাবে।
সুমন গুণ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি সূত্রে ও যেখানে বাংলা ভাষার চর্চা হচ্ছে সেখানকার মানুষকে নিয়ে এটি রচনা করা সম্ভব।
এসময় অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ মৌখিক সাহিত্যের ইতিহাস রচনায় প্রচেষ্টা চালানোর কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৮
এসকেবি/আরআর