ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বুলবুল চৌধুরীর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে বছরব্যাপী আয়োজন

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮
বুলবুল চৌধুরীর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে বছরব্যাপী আয়োজন সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরী। জাতীয় পর্যায়ে নৃত্যচর্চায় বিশেষ অবদানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও রয়েছে তার খ্যাতি। গুণী এ শিল্পীর নামানুসারেই প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র বুলবুল ললিতকলা একাডেমি। নৃত্যশিল্পের বাইরে তিনি লেখক হিসেবেও পরিচিত।

মহান এ শিল্পীর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যেই বছরব্যাপী যৌথ আয়োজন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা।

বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) শিল্পকলা একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান আয়োজকরা।

সভায় জানানো হয়, আগামী ১ জানুয়ারি ২০১৯-এ প্রখ্যাত এই নৃত্যশিল্পীর শততম জন্মদিন। বছরব্যাপী নানান কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে শিল্পীকে স্মরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, নৃত্য গবেষকদের লেখা নিয়ে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ, এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে নৃত্য উৎসব আয়োজন, নৃত্যনাট্য উৎসব, দেশব্যাপী নৃত্য প্রতিযোগিতা, 'বুলবুল চৌধুরীর নৃত্যধারা' বিষয়ক সেমিনার, গুণী শিল্পীদের সম্মাননাসহ বছরব্যাপী নানা কর্মযজ্ঞ রয়েছে এ আয়োজনে।

এ প্রসঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, আমাদের এই ভূখণ্ডে রবীন্দ্রনাথের পরই নৃত্যাচার্য বুলবুল চৌধুরীর নৃত্যশিল্পে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। আমরা আশা করছি সবাই মিলে নতুন বছর নৃত্যের কর্মযজ্ঞের মধ্যে কাটাতে পারবো।

নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক বলেন, জানুয়ারি মাসে বড় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে বছরব্যাপী এ কর্মযজ্ঞের উদ্বোধন করা হবে। এরপর শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় সারাবছর বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যদিয়ে আমরা তাকে স্মরণ করবো।

একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী আমানুল হক, একাডেমির পরিচালক ড. কাজী আসাদুজ্জামান, জসিম উদ্দীন ও সোহরাব উদ্দিন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন একাডেমির সচিব মো. বদরুল আনম ভূঁইয়া।

১৯১৯ সালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় জন্মগ্রহণ করা শিল্পী বুলবুল চৌধুরী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে 'প্রাচী' (১৯৪২) শিরোনামে উপন্যাস রচনা করেন। এছাড়া তার লেখা কয়েকটি ছোটগল্পও রয়েছে। ১৯৫৪ সালের ১৭ মে কলকাতায় তার মৃত্যু হয়। নৃত্যশিল্পে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তার নামে ১৯৫৫ সালের ১৭ মে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় বুলবুল ললিতকলা একাডেমী।

১৯৩৪ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ৭০টি নৃত্যনাট্য রচনা এবং সফলভাবে পরিবেশন করেন। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নৃত্যনাট্য হচ্ছে:  অভিমন্যু, ইন্দ্রসভা, সাপুড়ে, সুধন্বা, কবি ও বসন্ত, মরুসঙ্গীত, ফসল উৎসব, তিন ভবঘুরে, জীবন ও মৃত্যু, শিব ও দেবদাসী, অজন্তা জাগরণ, অর্জুন, কালবৈশাখী, দি রেইনবো ফেয়ারিজ, হাফিজের স্বপ্ন, ইরানের পান্থশালায়, সোহরাব ও রস্তুম, ক্ষুধিত পাষাণ, মহাবুভুক্ষা, নিষ্প্রদীপ, যেন ভুলে না যাই, প্রেরণা, বিদায় অভিশাপ, ক্রাইসিস, শৃঙ্খলের নিপীড়নে, দেশপ্রেমিক, ভারত ছাড়, আনারকলি, ননীচোর, চাঁদ সুলতানা, বীতংস, রাসলীলা প্রভৃতি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।