সর্বস্বান্ত যোনিফুল
কয়েকটি মরদেহ মাখানো
সকালের রুপালি রোদ্দুর
হাঁটু গেড়ে বসেছিল বাস্তুসাপের কুঁড়েঘর
রাতের সফেদ বিছানায়
ছড়ানো ছিটানো ডানার
হট্টগোল
মাথার খুব নিকটেই মরেছিল
কয়েকটি শব্দহীন কবুতর
দৈনন্দিন দুপুরের খবরে আমিষ
ফেসবুক লাইভ
যোগদান করেছেন নুসরাত বটি কাবাব
তার নিভৃত গোলাপি মাস্তুল
শতকরা সত্তর শতাংশ
দগ্ধ। খবর নিশ্চিত করেছে
বার্ন ইউনিট
তদন্ত কমিটি প্রস্তুত
আবহাওয়া খবরে বলছে
পর্যাপ্ত শিলাবৃষ্টি হবে
ধুয়ে যাবে ক্লেদ মা’র চোখের রক্তপাত
ভেতরে যদি কিছু থেকেও থাকে
খুন।
ক্ষতিগ্রস্ত যোনিফুল
তার ম্রিয়মাণ মিহিন পরাগ
ক্ষত-বিক্ষত জান্নাতুল ফেরদৌস
ফালতু কোনো ফটফটানি
ফলস সংবাদ টেলিকাস্টের
আগেই ফস করে ধরে ফেলবে
ফরেনসিক বিভাগ
আলামত পাওয়া গেলেই ঘ্যাচ্চাং
আর কত ক্লান্ত হবে মধ্যরাত
এখনো কয়েকটি ঝিঁঝি
পোকার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে জাহাঁপনা।
দুর্বল সংযোগে ফুলে উঠছে না তিল
পিঠার পেটের ধারে
ক্লান্ত মাহমুদ
চিতপটাং জাদুকর
তামাম বিশ্বজুড়ে
ক্রমাগত কান্নার রোল
ননলিনিয়ার অভিশাপ
এপিটাফ জুড়ে লিখিত হয়
কবিতার কলহ-কোন্দল
এইমাত্র পাওয়া খবরে ধ্বনিত
প্রতিধ্বনিদের আর্তচিৎকার।
খবরে প্রকাশ সিলিং ফ্যানে ঝুলে
আত্মহত্যা করেছেন মুঙ্খ
কফিন
দু’টি কফিন আনন্দ বিহারে
বর্ষা এলেই মিয়াকি মলহারে
ভিজে যাচ্ছে না-কি যায় না বোঝা
আনন্দ গীত বিরহতেই খোঁজা
না-কি চৈতের খরায় পুড়ছে ওরা
সবাই দেখছে হংস মিথুন জোড়া।
নখ
আর কিছু নয়
সমগ্র জীবনের ফাঁকে
গোপনে গোছানো থাকে
দশ আঙুল নখ
সর্ষে দানার মতো
এতটুকু বাহুল্য শখ
এইটুকু আবদার শুনে
নিভৃত গুঞ্জরণে মিয়াকি মলহার
অপেক্ষার এলাচি দানা
পুড়ে যেতে আছে মানা
আনখ বিলম্বিত বিরহ বাহার
টিস্যু কাগজের বুকে
সাদা নখ আরো ফিকে
সিন্দুকে তোলা
জগতের আয়োজনে
এসবের কি যে মানে
নখের জঞ্জালটুকু যদি যেত ভোলা।
পাইথন
দেখ উদারপন্থি পাইথন
তোমাকেও ছোবল খেতে হয়
আমাদের অজানা অধ্যায় রচিত হয়
ভিনগ্রহে
এলিয়টের কান্না থামায় সত্যজিতের ইটি
খেয়ালের বেশ্যালয়ে
জমে ওঠে ঋতুভিত্তিক সার্কাস
হিসেবের এহেন গরমিল পর্যবেক্ষণ পূর্বক
আঁতকে ওঠেন যাত্রা দলের
মহাপরিচালক।
পোস্টমাস্টার
টিকিট কেটে বসে আছি, দরজাটা খুঁজে পাচ্ছি না
অথচ স্পষ্টতই ট্রেন থামার শব্দ পেলাম
আর কেউ কেউ দরজা খুলে যাত্রা করেছে অজানায়
বুঝতে পারলাম কেউ কেউ নেমে যাবে
হয়তবা যাচ্ছেও
অজানা তুষারের পৈথানে অনিশ্চিত স্খলন তার মায়াবী ডানায়
পোস্টমাস্টার বাবু আপনি কেমন আছেন?
কোনো খবর পেয়েছিলেন প্রাপকের
চিঠিটার!
রানারের খবর পেয়েছিলেন বলেই জানতাম
গন্তব্যের উদ্দেশ্য, হেডমাস্টারের বুক
বুক পকেটে জমানো মরণ
শব্দার্থ, ভাবসম্প্রসারণ
ছিল বলেইত জানতাম
অথচ দরজাটা
হারিয়ে ফেললাম
প্রিয় স্টেশন, এমন সরল হারানোতেই বিশ্বাস এনেছিলাম
দরজাটা খুঁজে পাচ্ছি না
নির্বিকার কুয়াশা কফিন ডুবে আছে মগ্নতায়
এসবের যথাযথ কারন জানতে পারনি! প্রিয় শব
তাহলে খুঁজো না
খুঁজে পেলে কষ্ট হবে প্রাপকের
চাকরি হারাবেন পোস্টমাস্টার
দরজাটার দরকার ছিল খুঁজে পাওয়া, টিকিট কেটে বসে ছিলাম
বসে আছি বসে থাকতেই থাকব অনাদিকাল
থেমে যাওয়া থাকা শব্দটার দোষ বাসা বেধেছিল বাস্তুসাপে নিষিন্দা পাড়ায়
পথটাও ক্লান্ত হয়েছিল কিনা
নাহলে এমন হবার কথা নয়
পাথুওে পথের মতন ভাঙা ফুল, টকটকে কালো দুপুর, ভাঙা পদ্মফুল, গোলাপী পায়েল
সরু চিকন পথের মতন
দীর্ঘ আলো রেখাটার ভুল, হতে পারে
কোথাও না কোথাও হারানোর কথা ছিল
সরল হারামন মুনিয়ার চোখ, কাঁচা কলাপাতা, পাতানো প্রসাদে কোনো একটা ভুল
নির্ভুল জোট বেঁধেছিল
গাঁটছড়া বেঁধেছিল, টুংটাং টুংটাং ভুল ছিল, পাখিসব কওে রব রাতি পোহাইল
হাট করে খোলা ছিল দরজার খিল, খিল খিল নৈঃশব্দে হেসেছিল টিকিট
টিকিট কেটে বসে ছিল দরজাটা
যেন সেও গন্তব্যহীন
স্পষ্টতই ট্রেন থামার শব্দ পেলাম
আর কেউ কেউ অজানায়
এমনকি কোনো পথ খোলা ছিল না দরজার
টিকিট কেটে বসে আছি...—
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০