ঢাকা: আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের আগ্রহ ও সন্ধিৎসা কেবল পুথির জগতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তার বিচিত্রমুখী অনুরাগ ও কৌতূহল প্রসারিত হয়েছে ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি, ধর্মতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, সাহিত্য-সমালোচনা, রাজনীতি এমনকি আধুনিক সাহিত্যের প্রতিও।
রোববার (১১ অক্টোবর) আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ১৪৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত একক বক্তৃতায় এ কথা বলেন অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী।
বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
‘সাহিত্যবিশারদ: পুথিপ্রেমিকের লোকসংস্কৃতি সন্ধান’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন গবেষক অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান।
বক্তৃতায় অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, ঐতিহ্য-অন্বেষার সূত্রেই তার লোকসংস্কৃতি চর্চার সূচনা। একদিকে তিনি ছিলেন ফোকলোর-উপকরণের নিষ্ঠ সংগ্রাহক, অপরপক্ষে এই বিষয়ের প্রাজ্ঞ আলোচক। অজ্ঞাত-লুপ্ত ঐতিহ্য-উপাদানের সন্ধান, জন্মভূমির মহিমা-প্রচার ও স্বদেশ-আবিষ্কারের চেতনা থেকেই সাহিত্যবিশারদ ফোকলোর চর্চায় ব্রতী হন। তাই বলা চলে, তার পুথি সংগ্রহ ও আলোচনার পরিপূরক কাজ ছিল এই লোকসংস্কৃতি চর্চা।
শামসুজ্জামান খান বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ছিলেন এক অসাধারণ বঙ্গীয় মনীষা। বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা বিতর্কের আদিপর্বে বাংলার পক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি আমাদের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। পাশাপাশি বাঙালির আত্মসত্তা বিকাশের পূর্ণ পরিচয় ধারণ করেছে সাহিত্যবিশারদের পুথিসাধনা, লোকসংস্কৃতি চর্চা এবং তার সামগ্রিক জীবনসংগ্রাম।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডেমি মহান গবেষক আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একাডেমির মূল মিলনায়তনের নামকরণ করেছে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তন। সাহিত্যবিশারদের রচনাবলি, অভিভাষণ সমগ্র, জীবনী ও নিবেদিত প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশের মাধ্যমে একাডেমি বাংলা সাহিত্যে তার অবদানকে স্মরণ করেছে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। আগামী বছর আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জন্মের সার্ধশতবর্ষকে কেন্দ্র করে তার জীবন ও কৃতি নিয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
ডিএন/এমজেএফ