নরসিংদী: চলে গেলেন নরসিংদীর শেকড় সন্ধানী লেখক সরকার আবুল কালাম (৭৭)। সোমবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যায় নরসিংদী সদরের সাটিরপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন তার পারিবারের ঘনিষ্ঠজন জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মালিক সমিতি বাংলাদেশের (নাসিব) নরসিংদী শাখার সভাপতি মো. রুস্তম আলী।
সরকার আবুল কালাম ১৯৪৪ সালে নরসিংদী সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের বাউশিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা মরহুম আব্দুল হেকিম পণ্ডিত ও মা মরহুম সুফিয়া বেগম। সবমিলিয়ে তার লেখা গ্রন্থের সংখ্যা ৩৫টির বেশি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তার বড় ধরনের কোনো সমস্যা না থাকলেও বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, গুনী এই লেখকের প্রাথমিক শিক্ষা করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তিনি রায়পুরার আদিয়াবাদ মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, তৎকালীন নরসিংদী মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি ও বিএ সম্পন্ন করেন। সবশেষ বিএড কোর্স করেন ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে।
ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন। তার প্রথম উপন্যাস ‘চমন’। এছাড়াও নরসিংদীর শহিদ বুদ্ধিজীবী, কন্যা জায়া জননী, নরসিংদীর মুক্তিযুদ্ধ, নরসিংদীর গুনিজন, মানুষ আর মনুষ্যত্বের ভাবনা লিপি, নরসিংদীর ঐতিহ্য কথা, নরসিংদীর চর এলাকার মাটি ও মানুষসহ বিভিন্ন বইয়ে আঞ্চলিক শেকড় খুঁজেছেন। যার ফলে স্থানীয়ভাবে তিনি শেকড় সন্ধানী লেখক স্বীকৃতি পেয়েছেন।
চলতি বছরের জুলাইয়ে নরসিংদী জেলা শিল্পকলা একাডেমি তাকে গুনীজন সম্মাননা প্রদান করে। এছাড়াও আলাউদ্দিন আল আজাদ সাহিত্য পুরস্কার, নীলাচলে কলাবিতান সাহিত্য পুরস্কার সম্মাননাসহ নানা সম্মানে ভূষিত হন।
উন্মোচন সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা মাহবুব আলম বলেন, স্যারের এই চলে যাওয়াতে নরসিংদীর সাহিত্য অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পথ মসৃন নয় জেনেও এই লোকটি নরসিংদীর ঐতিহ্য খুঁজেছেন। শেকড়ের টানে ঘুরেছেন চরাঞ্চল, খুঁজেছেন এই অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ এবং সমৃদ্ধ করতে চেয়েছেন এখানকার সাহিত্যকে।
জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মালিক সমিতি বাংলাদেশের (নাসিব) নরসিংদী শাখার সভাপতি মো. রুস্তম আলী বলেন, সরকার আবুল কালাম আজ সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
রাত পৌনে ৯টায় তার প্রিয় প্রতিষ্ঠান নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জানাজা নামাজ শেষে সদর উপজেলার বাউশিয়া গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২১
আরএ