ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উদযাপন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২১
আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উদযাপন

ঢাকা: বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান গবেষক আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে বাংলা একাডেমি। সোমবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ উপলক্ষে একক বক্তব্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি, পত্রিকা ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) নূরুন্নাহার খানম। জাতিস্মর মনীষী আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ শীর্ষক বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক শিরীণ আখতার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।

স্বাগত বক্তব্যে নূরুন্নাহার খানম বলেন, বাংলা একাডেমি জন্মলগ্ন থেকে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদকে স্মরণ করে আসছে বহুমাত্রিক আয়োজনে। এবার সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতেও আমরা তার নবমূল্যায়নে ব্রতী হয়েছি।

একক বক্তা অধ্যাপক শিরীণ আখতার বলেন, পুথি-সাহিত্যের গবেষণায় সারাজীবন কাটালেও আধুনিক সাহিত্য ও ভাবধারার সঙ্গে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের নিবিড় পরিচয় ছিল। সব রকম গোঁড়ামি, কুসংস্কার, সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে তিনি ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতা তাকে স্পর্শ করেনি। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে তিনি সবার আপনজন ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে আবদুল করিমকে জানতে হলে এবং তার মন-মানস সম্পর্কে স্বচ্ছধারণা পেতে হলে তার সংগ্রহ কর্মকাণ্ড, সমগ্র রচনাবলী ও তার চিন্তা-চেতনার সঙ্গে পরিচিত হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কাজী নজরুলের আগে একজন শীর্ষ মুসলমান বাঙালি মুন্সি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ তার ধর্মীয় অনগ্রসরতা কাটিয়ে প্রবল সাম্প্রদায়িকতার ভেতরে হেঁটে হেঁটে কীভাবে তার দেশ-কাল-সমাজকে ডিঙিয়ে অসাম্প্রদায়িক হয়ে উঠেছেন তা একটি বিস্ময়কর ব্যাপার! যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আমরা চেয়েছি, তিনি সেই বাংলাদেশের কথা, বাংলা ভাষার কথা বহু আগেই বলেছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবুল মনসুর বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের মতো মনীষীদের আনুষ্ঠানিকতার বৃত্ত ভেদ করে সব সময়ই স্মরণে রাখতে হবে কারণ এমন মানুষদের কাছেই আছে আমাদের এগিয়ে যাবার প্রয়োজনীয় রসদ।

তিনি বলেন, সাহিত্যবিশারদ সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে পুথি উদ্ধার ও গবেষণার কাজ চালিয়ে গেছেন। তার কাছ থেকে আমাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে সাধনা ও একাগ্রতার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জাতিযাত্রা ও মানবযাত্রা তার জন্মের সার্ধশত বর্ষ পেরিয়ে আজো বিশেষ তাৎপর্যে উদ্ভাসিত। সমকালীন সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে তিনি তার ব্যক্তিগত বর্তমানকে গোটা জাতির সেবায় উৎসর্গ করেছেন এবং ভবিষ্যত মানবতার সঙ্গে আমাদের যুক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, স্বশিক্ষিত এবং সুশিক্ষিত সাহিত্যবিশারদের জীবন থেকে আমাদের স্ব-শৃঙ্খলা ও স্ব-ব্যবস্থাপনার শিক্ষা নেওয়ার আছে। তার মাতৃভাষা প্রেম, স্বদেশপ্রীতি ও অসাম্প্রদায়িক জীবনদৃষ্টিই তো ভবিষ্যৎ আলোকিত বাংলাদেশের রূপকল্প।

অনুষ্ঠানে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের পরিবারের সদস্য অধ্যাপক নেহাল করিম, অ্যাডভোকেট যাহেদ করিম ও গীতিকবি হাসান ফকরী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।