ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসব। এ উৎসবে প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আবৃত্তি পদক প্রদান’ করা হবে।
আগামী ২৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন এবং পদক দেবেন।
‘জন্মের সুবর্ণে জাগো সম্প্রীতির স্বরে, মুক্তির ডাক দেয় পিতা আজও ঘরে ঘরে’ প্রতিপাদ্যে সারাদেশের আবৃত্তি সংগঠনগুলোর ফেডারেশন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ এ উৎসবের আয়োজন করেছে।
করোনা সংক্রমণ বাড়ায় নতুন ব্যবস্থাপনায় সারাদেশের প্রতিটি জেলা থেকে ভার্চ্যুয়ালি সাড়ে চার হাজার আবৃত্তি শিল্পী এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হবেন।
উদ্বোধনী দিন বেলা সাড়ে ১১টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি সংসদ সদস্য (এমপি) আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
এছাড়া জেলা পর্যায়ের আবৃত্তি সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অনলাইনে এ আয়োজনে অংশ নেবেন। ৬৪ জেলায় একই সঙ্গে স্থানীয় সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে এ উৎসবের অনুষ্ঠান চলবে।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরেন আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন তালুকদার, যুগ্ম সম্পাদক আজহারুল হক আজাদ, মীর মাসরুর জামান রনি ও মাসুদুজ্জামান।
আহকাম উল্লাহ বলেন, প্রথমবারের মতো জাতীয় কোনো পুরস্কার সংগঠনের মাধ্যমে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য আমরা গর্বিত। আবৃত্তি শিল্পীরা যেন মুক্তিযুদ্ধের কবিতা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখিত কবিতা পাঠ করতে না পারে সেজন্য একটা সময় দেশের সবগুলো মিলনায়তন বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আবৃত্তি শিল্পীরা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় শত বিরোধিতার মুখে পথে-ঘাটে কবিতা পড়েছেন। আজ আবৃত্তিকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বর্তমান সরকার। যা আমাদের গর্বিত করেছে।
তিনি জানান, এ বছর ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ সালের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক’ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরমধ্যে ২০২০ সালের জন্য গোলাম মুস্তাফাকে (মরণোত্তর) পদক দেওয়া হবে। ২০২১ সালের জন্য সৈয়দ হাসান ইমাম ও আশরাফুল আলম এবং ২০২২ সালের জন্য জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, কাজী মদিনা ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ পদক দেওয়া হবে। এবার করোনার কারণে জানুয়ারিতে এই পদক দেওয়া হলেও এরপর প্রতিবছর ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে এ সম্মান জানানো হবে। এছাড়াও আবৃত্তি শিল্পের বিকাশে অবদানের জন্য দেশের ৫০ জন আবৃত্তিকারকে ‘বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি স্মারক’ দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি স্মারক’ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো- মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, ঢাকা মহানগর পুলিশ, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
ব্যক্তি পর্যায়ে ‘বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি স্মারক’ প্রাপ্তরা হলেন- ওয়াহিদুল হক (মরণোত্তর), নাজিম মাহমুদ (মরণোত্তর), কামাল লোহানী (মরণোত্তর), নিখিল সেন (মরণোত্তর), অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস (মরণোত্তর), কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী (মরণোত্তর), মৃনাল সরকার (মরণোত্তর), হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য (মরণোত্তর), তারিক সালাহউদ্দীন মাহমুদ (মরণোত্তর), খান জিয়াউল হক (মরণোত্তর), রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, ম. হামিদ, এস এম মহসিন (মরণোত্তর), অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী, কাজী আরিফ (মরণোত্তর), ইশরাত নিশাত (মরণোত্তর), নাসির উদ্দীন ইউসুফ, অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, প্রজ্ঞা লাবনী, কেয়া চৌধুরী, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ড. আব্দুল মালেক, লিয়াকত আলী লাকী, গোলাম কুদ্দুছ, বিপ্লব বালা, রণজিত রক্ষিত (মরণোত্তর), কামরুল হাসান মঞ্জু (মরণোত্তর), নিমা রহমান, খালেদ খান (মরণোত্তর), হারুন-অর রশিদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, সাগর লোহানী, রূপা চক্রবর্তী, লায়লা আফরোজ, ডালিয়া আহমেদ, বেলায়েত হোসেন, ইস্তেকবাল হোসেন, মীর বরকত, গোলাম সারোয়ার, হাসান আরিফ, মোকাদ্দেস বাবুল, এনামুল হক বাবু, আজমল হোসেন লাবু, মোহাম্মদ কামাল, রফিকুল ইসলাম, রেজীনা ওয়ালী লীনা, ইকবাল খোরশেদ, ফয়জুল আলম পাপ্পু, কাজী মাহতাব সুমন, মাসুদুজ্জামান, মীর মাসরুরজামান রনি, রাশেদ হাসান, আজহারুল হক আজাদ, শিমুল মুস্তাফা, মাহিদুল ইসলাম, মো. আহকাম উল্লাহ ও আসাদুজ্জামান নূর।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২২
এইচএমএস/আরআইএস