বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া ১৩ মে (শনিবার) সিডনি অলিম্পিক পার্কে বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করবে।
এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগিতায় তারা প্রয়োজনীয় সংখ্যক মুখোশ, ব্যানার, ফেস্টুন তৈরি করে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে এসেছে।
[দুই]
বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া প্রতিবছর বৈশাখী মেলা উপলক্ষে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যেমন বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে নামি-দামী শিল্পীদের নিয়ে আসে, তেমনি সিডনিস্থ সাংস্কৃতিক সংগঠন পথ প্রোডাকশন্সের প্রযোজনায় তারা থিয়েটেরিক্যাল মঞ্চস্থ করে থাকে। প্রতি বছর বৈশাখী মেলায় আগত ২০/২৫ হাজার দর্শক পিনপতন নিরবতায় তাদের পারফর্মেন্স উপভোগ করে। একই কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল এ বছর বাংলা আধুনিক গানের কিংবা ছায়াছবির গানের কিংবদন্তি শিল্পী এন্ড্রু কিশোর এবং জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আরেফিন শুভকে এনেছেন।
১৩ মে সিডনি অলিম্পিক পার্কের এএনজেড স্টেডিয়ামে এন্ড্রু কিশোর গান গাইবেন। পথ প্রোডাকশন্সের প্রযোজনায় ‘আই এম দাই ফাদার’ থিয়েটেরিক্যালে বঙ্গবন্ধু চরিত্রে আরেফিন শুভ অভিনয় করবেন। এন্ড্রু কিশোরের সেই বিখ্যাত গান ‘পড়ে না চোখের পলক’ এর মতো সিডনিবাসী বাঙালিদেরও আরেফিন শুভ’র থেকে চোখের পলক পড়বে না।
[তিন]
বাংলাদেশের বাইরে কোনো ব্যস্ততম মহাসড়কে, তা আবার কোনো অতি উন্নত দেশে বাংলায় লেখা বিশাল বিলবোর্ডের কথা কেউ কি কখনো ভেবেছিল? হ্যাঁ, ভেবেছিল। বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার লোকজন সত্যিই তা ভেবেছিল। তারা এবছর এটা সত্যি করে দেখিয়েছে। সিডনির ব্যস্ততম মহাসড়ক “কিংসজর্জেস রোড” এ বাঙালি অধ্যুষিত (লাকেম্বা-ওয়ালীপার্ক) এলাকায় বাংলায় লেখা বিলবোর্ড বসিয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে যতবার গাড়ি চালিয়ে যাই, মনটা ভরে যায়। মনে মনে গেয়ে উঠি ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...’ কিংবা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’।
[চার]
বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়া, এই সংগঠনটি এরকম আরো অনেক কিছুই করে দেখিয়েছে; তারাই প্রথম সিডনির পূর্বের মাঠ, পশ্চিমের ক্ষেত, আমতল-জামতলা থেকে বাঙালির নববর্ষ উদযাপনকে একটি আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে নিয়ে এসেছিল। যেখানে ফায়ার ওয়ার্কসসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ফেস্টিভ্যালে যা কিছু থাকা দরকার, তার সব ব্যবস্থাই থাকে।
সিডনিতে বছর জুড়ে বাঙালিদের বিভিন্ন রকম সফল, অসফল এবং বিফল মেলা হয়; মেলার উপলক্ষ এবং নামের কোনো শেষ নেই। মেলা আয়োজন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেমন উপযুক্ত টয়লেট ফ্যাসিলিটিজ, ইমার্জেন্সি সার্ভিস, পার্কিং সুবিধা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পারফরমারদের জন্য গ্রিনরুমের সুবিধা, মঞ্চ এবং সুস্থ-সবল শব্দ ব্যবস্থাপনা, শিশুদের জন্য নিরাপত্তা ছাড়াই মেলার আয়োজন করে ফেলে। অনেকটা দায়সারা গোছের আয়োজন। যার ফলে আয়োজনকারীদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যায়। একই আয়োজক দ্বিতীয়বার একই স্থানে মেলার আয়োজন করতে পারে না। বারবার কমিটি ভেঙে যায়। নিজেদের মধ্যে অসন্তোষের কোনো শেষ থাকে না। কিন্তু একমাত্র সংগঠন বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল, অস্ট্রেলিয়া খুবই ব্যতিক্রম। তারা ২৫ বছর যাবৎ সিডনিতে সফলভাবে বৈশাখী মেলার আয়োজন করছে। কখনো কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অল্প-বিস্তর ঝক্কি-ঝামেলা হয়েছে কিন্তু সেখানে আয়োজকদের কোনো হাত ছিল না। তাদের আন্তরিকতা ছিল প্রশ্নাতীত।
পাদটীকা
ধন্যবাদ বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলকে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে এমন একটি আন্তর্জাতিক ভেন্যু হচ্ছে সিডনি অলিম্পিক পার্কের এএনজেড স্টেডিয়াম। অস্ট্রেলিয়ার সবচাইতে প্রেস্টিজিয়াস ভেন্যুতে বাংলা নববর্ষ উদযাপন তথা বৈশাখী মেলার আয়োজন করে, অস্ট্রেলিয়ার মূলধারার মানুষের কাছে বাঙালিদের পরিচয়কে গৌরাবান্বিত করার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৭
এসএইচ