ঢাকা: মালয়েশিয়ার সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করছেন, চারদিন আগে ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ মালয়েশীয় উড়োজাহাজ মালাক্কা প্রণালীতে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল। এই প্রণালীতে থেকেই সর্বশেষ উড়োজাহাজটি রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।
২০০৯ সালের পর এই উড়োজাহাজ নিখোঁজের ঘটনা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক রহস্যের সৃষ্টি করে। এর সন্ধানে অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, নিউজজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে ‘ম্যাসিভ অপারেশন’ চালাচ্ছে। কিন্তু এমএইচ৩৭০ উড়োজাহাজটির এখন পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
কমপক্ষে ৪০টি জাহাজ ও ৩৪টি বিমান মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের উপকূল অঞ্চলে রাত-দিন সন্ধান করে যাচ্ছে। নিখোঁজ যাত্রীর প্রায় অর্ধেকেই চীনা নাগরিক।
এর আগে দুই জাল পাসপোর্টধারী উড়োজাহাজে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছে মালয়েশিয়া পুলিশ। মালয়েশিয়ার পুলিশ, জানিয়েছে চোরাই পাসপোর্ট ব্যবহারকারী দুজনের মধ্যে তারা একজনের পরিচয় শনাক্ত করেছে। পৌরিয়া নূর মোহাম্মদ মেহেরদাদ নামের ওই যাত্রী ইরানি। তবে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সংশ্লিষ্টতা পাচ্ছি না।
সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ার কেলানটান রাজ্যের রাজধানী কোটা ভারু থেকে কোর্স পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে মালাক্কা প্রণালী অতিবাহিত করে। এরপরই রাডারের সঙ্গে সকল ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
মালয়েশিয়ার এয়ার ফোর্সের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, নিখোঁজ হওয়ার আগে উড়োজাহাজটি তার নির্দিষ্ট রুট পরিবর্তন করে পশ্চিমে যাত্রা শুরু করেছিল।
মালাক্কা প্রণালী বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম একটি শিপিং চ্যানেল। এর সঙ্গে মালয়েশিয়ার ওয়েস্ট কোস্টের সংযোগ আছে।
বোয়িং ৭৭৭-২০০ সিরিজের উড়োজাহাজটি স্থানীয় সময় হত শুক্রবার দিনগত রাত ১২টা ৪১ মিনিটে বেইজিংয়ের উদ্দেশে কুয়ালালামপুর ছেড়ে যায়। এর ঘণ্টাখানেক পর ভিয়েতনামের আকাশসীমায় নিখোঁজ হয় উড়োজাহাজটি। সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে চীনের রাজধানীতে পৌঁছানোর কথা ছিলো।
বিধ্বস্তের খবর পাওয়ার আগে এদিকে ভিয়েতনামের ওয়েবসাইট ভিএন এক্সপ্রেস জানায়, ভিয়েতনামের সন্ধান ও উদ্ধার কর্মকর্তারা ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চলীয় কা মাউ প্রদেশের ১২০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে সর্বশেষ উড়োজাহাজটির সংকেত পেয়েছিলেন।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ জৌহারি ইয়াইয়া বলেছিলেন, ‘আমার অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, বেইজিংয়ের উদ্দেশে রাত ১২টা ৪১ মিনিটে কুয়ালালামপুর ত্যাগকারী এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটটির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। ’
১৯৮১ সাল থেকে সেবা প্রদানকারী মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের সবশেষ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৯৫ সালে। ওই সময় এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ মালয়েশিয়ার তাওয়াউ শহরে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৩৪ জনের প্রাণহানি ঘটে।
গত ২০ বছরে বোয়িং ৭৭৭ কোনো ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়েনি। তবে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে সান ফ্রান্সিসকো দুর্ঘটনায় ২৯১ যাত্রী ও ১৬ ক্রুবাহী ফ্লাইটটির তিনজন নিহত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৪