ঢাকা: অনিয়মের মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৪১৫ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার পর বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউনাইটেড আবারো বাজার থেকে ২০০ কোটি টাকা তুলে নিচ্ছে।
এরই মধ্যে এই টাকা তোলার কাজ শুরু করেছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ।
ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, এই অর্থ সাপোর্ট পেলে তারা বন্ধ হয়ে যাওয়া রুট চালুসহ চলমান আর্থিক দূরবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন তাসবিরুল আহমেদ চৌধুরী বর্তমানে স্পেনে রয়েছেন। আগামী শুক্রবার দেশে ফিরবেন তাসবিরুল। দেশে ফিরে এ সংক্রান্ত সব প্রক্রিয়া শুরু করবেন তিনি।
রাইট শেয়ারের মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে টাকা তুলতে এয়ারওয়েজের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন লাগে। পর্ষদের সদস্যদের আগেই ম্যানেজ করে রেখেছেন তাসবির। এরপর এয়ারওয়েজের বাষিক সাধারণ সভায় তা পাশ করতে হবে।
টাকা তুলতে এসব প্রক্রিয়ায় সবকিছুই যাতে এয়ারওয়েজের পক্ষে থাকে সেভাবেই সব আয়োজন সম্পন্ন করে রেখেছেন তাসবিরুল।
তাসবিরুল এয়ারওয়েজের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আগেই এ সংক্রান্ত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রাখতে বলেছেন। শুক্রবার দেশে ফিরেই এ ব্যাপারে বাকি কাজ সম্পন্ন করে শেয়ারবাজারে টাকা তোলার আবেদন করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কাছে ৫৮ কোটি টাকা পাবে। এই টাকাও তারা অনেক দিন ধরেই পরিশোধ করছে না। সম্প্রতি তারা এই ৫৮ কোটি টাকার ২৮ কোটি টাকা মওকুফ চেয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দিয়েছে।
নতুন করে আবার শেয়ারবাজার থেকে অর্থ তোলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের অ্যাসিসট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যেহেতু চেয়ারম্যান তাসবিরুল আহমেদ দেশে নেই, তাই এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
আগের অনিয়মের পর আবারো ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের রাইট শেয়ার ছাড়া নিয়ে শেয়ারবাজারে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
উড়োজাহাজ কেনার নাম করে অনিয়মের মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৪১৫ কোটি টাকা তোলার পাশাপাশি ২০ বছরের পুরনো উড়োজাহাজ কিনেছে আন্তর্জাতিক দর থেকে অনেক বেশি দামে। এতে দেশ থেকে বাইরে অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। কারসাজি করে শেয়ারের দাম বাড়ানোর তথ্যও পাওয়া গেছে এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে।
ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ২০১০ সালের ১২ জুলাই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এরপর এক বছরের কম সময়ে কোম্পানিটি অন্তত ১০টি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য দেয়।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (এসইসি) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না দিয়ে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিধিমালা উপেক্ষা করেছিল ২০১১ সালে। একই বছর ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। এর এক বছরের মাথায় ২০১২ সালে রাইট শেয়ারের মাধ্যমে আরো ৪০০ কোটি টাকা উত্তোলনের আবেদন করে। পরে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৩১৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ৩০১৪