ঢাকা: স্বাস্থ্যগত কারণে দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন স্টিলের পদত্যাগের নেপথ্যে রয়েছে জিএসএ নিয়োগ ও কমিশন বাণিজ্য ইস্যু।
বিমান বাংলাদেশের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়োগ ও লিজ বাণিজ্যের কমিশন নিয়ে বনিবনা না হওয়াতেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।
প্রকাশ্যে বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদ ঘোষণা দেন এয়ারলাইন্সকে লোকসানের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে নিয়োগ দেওয়া হয় ব্রিটিশ নাগরিক কেভিনকে।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ থেকে চাকরিচ্যুত কেভিনকে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নিয়োগ দিয়েছিলেন জামাল উদ্দিন। কেভিন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে সুনামের সঙ্গে কাজ করতে পারেননি। সেখানে জুনিয়র পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। এর বাইরে আরো যে দুটি এয়ারলাইন্সে কাজ করেছেন তার মধ্যে এসএএমএ এয়ারলাইন্সে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ ছিল। একটা সময় এয়ারলাইন্সটি বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধের পেছনে কেভিনের হাত ছিলে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, জিএসএ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেভিন। শুধু তা-ই নয় এদের সাক্ষাৎকার, বিভিন্ন দেশ সফর করে জিএসএ’র বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া থেকে শুরু করে চূড়ান্ত নিয়োগ তার হাত দিয়েই হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে বিমানের কাউকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এই সফরের ক্ষেত্রে জিএসএ এবং কেভিনের মধ্যে কি আলাপ আলোচনা হয়েছে এবং লেনদেন হয়েছে তা একমাত্র তিনিই জানেন।
এখান থেকেই জামাল উদ্দিনের সঙ্গে কেভিনের দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর কেভিনের সফরের পর বিভিন্ন দেশ থেকে জিএসএ এজেন্টরা প্রেজেন্টেশন দেওয়ার জন্য বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় আসেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কমিটিকে পাশ কাটিয়ে তিনিই জিএসএ নিয়োগ চূড়ান্ত নিয়োগ দেন। সর্বশেষ বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজের ৫০০ কোটি টাকার লিজ বাণিজ্যে কমিশন নিয়ে জামাল উদ্দিন ও কেভিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার ধারণ করে।
এর আগে হজের জন্য কাবো এয়ারলাইন্স ও বোয়িং ৭৬৭ উড়োজাহাজের লিজ বাণিজ্যেও কমিশন লেনদেন হয়। ব্রিটিশ নাগরিক কেভিন স্টিল বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সে যোগ দেন গেল বছরের মার্চে। এই সময়কালে বিমানে তার উপহার ২১৪ কোটি টাকার লোকসান।
বিমান বাংলাদেশের এক কর্মী নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ৩০ লাখ টাকার প্রধান নির্বাহী এনে যদি লোকসান হয় আর তিনি নিজেই যদি দুর্নীতি করেন তাহলে তাকে দিয়ে কীভাবে বিমানের উন্নতি সম্ভব।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৪
** বিমানের বিতর্কিত এমডি কেভিনের পদত্যাগ