ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

গোয়াতে গিয়ে জেলি ফিসের খপ্পরে!

শাহানা হুদা, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৯ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৪
গোয়াতে গিয়ে জেলি ফিসের খপ্পরে!

পর্তুগীজদের স্মৃতি বিজড়িত স্থান গোয়ার রাজধানী পানজিমে নেমেই আমরা ছুটে গেলাম সাগরে। ৪৫০ বছরের পর্তুগীজ ইতিহাস সমৃদ্ধ গোয়া ভারতের সবচেয়ে ছোট কিন্ত ধনী রাজ্য।

এটি বিখ্যাত এর অসংখ্য সাগর সৈকত, নামকরা চার্চ, জীববৈচিত্র্য আর ঐতিহাসিক সব নির্মাণশৈলীর জন্য।



তবে গোয়ার সৈকত যে জুন জুলাই মাসে আরেকটি ব্যাপারেও খুব ’নামকরা’ তা আমরা জানতাম না। আর তাই প্রথমেই মুখোমুখি হলাম জেলি ফিশের । সাগর সৈকতে নামার পরপরই আমার মেয়ে অনসূয়াকে জেলি ফিশ এমনভাবে হামলা চালিয়ে কাহিল করে ফেললো যে,  তাকে হাসপাতালেও নিতে হয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য। সেখানে গিয়ে দেখলাম জেলি ফিশ আক্রান্ত আরো ২৫/৩০ পর্যটক চিকিৎসা নিচ্ছে। সেদিনের অসহ্য ব্যথার কথা ভেবে অনসূয়া কিন্ত বাকি দিনগুলোতে আর সাগরে নামেনি।



আরব সাগরের পাশে অবস্থিত অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই গোয়াতে, পর্তুগীজ ব্যবসায়ীরা এসে প্রথম গোড়াপত্তন করলেও, ১৫১০ সাল থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত এটি পর্তুগীজদের শাসনে ছিল। ভাস্কো দা গামা সবচেয়ে বড় শহর আর মারগাওতে রয়েছে অসংখ্য পতুর্গীজ স্থাপত্য ।



পুরোনো শহরটা দেখলে মনেহবে বুঝি ঘুরে বেড়াচ্ছি পর্তুগীজ কোন কলোনিতে, আর নতুন শহরটি সাজানো হয়েছে একেবারে ইউরোপীয় ধাঁচে। মানদভী নদীতে ঘুরতে ঘুরতে দেখে নেয়া যায় চারপাশটা।


 
পুরোনো শহরটাকে, পুরোনো চার্চের শহরও বলা যায়। ১৬০৫ সালে তৈরি দি ব্যসিলিকা অব বম যিসাস । এখানে রয়েছে সেইন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ারের মরদেহ। এটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ। মুগ্ধ হলাম ১৬১২ সালে তৈরি ফোর্ট আগুয়াদা দেখে । এর মানে পানি। মূলত ডাচ ও মারাঠী নৌযানের ওপর চোখ রাখার জন্য এটি তৈরি করা হলেও ইউরোপ থেকে আসা নৌযানগুলো এটা দেখে পথ চিনতো। এখানে ছিল একটি সুপেয় পানির বিশাল জলাধার । এইপথ দিয়ে যাতায়াতকারী নৌযানগুলো এই জলাধার থেকে পানি নিতো । এখানে একটি অস্ত্রভান্ডার ও লাইটহাউজও ছিল।



গোয়ার মশলা বিশ্বখ্যাত। নানাধরণের মশলা আর হার্ব পাওয়া যায়। গোয়ার খাওয়া দাওয়া খুব, খুবই মজাদার এবং ঝাল। এমনকি পথের পাশের খাবারও। খাদ্যতালিকায় পাওয়া যায় নানাধরণের মাছ, কাঁকড়া, অক্টোপাস, স্কুইড, শামুক, ঝিনুক। বিভিন্ন মানের হোটেল, মোটেলের অভাব নেই।



গোয়া যাওয়ার আগে আমরা চট করে দেখে নিলাম ভারতের সম্ভবত সবচেয়ে নোংরা শহর বোম্বে । তবে বোম্বে থেকে ট্রেনে গোয়া যাওয়ার পথটাও কিন্ত দুর্দান্ত। আমাদের মনে করিয়ে দিল জনপ্রিয় সিনেমা ‘ ফ্রম বোম্বে টু গোয়া ‘র কথা । সুরঙের ভেতর দিয়ে ট্রেন চলার অভিজ্ঞতাও পেয়ে গেলাম এই পথে।

বাংলাদেশ সময় ২১২৫ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।