ঢাকা: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রুট পরিকল্পনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যোগ দেওয়ার পর নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়ে বিমান এ পরিবর্তন আনছে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাইল হেউড বিমানে যোগ দেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে। দায়িত্ব নিয়েই নতুন প্রধান নির্বাহী নেমে পড়েন বিমানের রুট পরিকল্পনা নিয়ে। পরিকল্পনা নেন লোকসানি রুট সমূহ বন্ধ আর যেসব রুটে যাত্রী বেশি ও লাভজনক সেসব রুটে বাড়তি ফ্লাইট চালু করার। বিগত প্রায় দুই মাস ধরে এসব বিষয়ে গবেষণা শেষে তিনি নতুন রুট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাস হিসেবে বেছে নিয়েছেন মার্চকে।
বিমান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এ মাসেই নতুন প্রধান নির্বাহী সৌদি আরবের রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মাম, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর, ভারতের কলকাতা রুটসমূহে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নামছেন। আগামী ২৯ মার্চ থেকে এসব রুটসমূহে একে একে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালু হচ্ছে। এর পাশাপাশি এপ্রিল মাসেই বন্ধ হচ্ছে ঢাকা-রোম-ঢাকা ফ্লাইট।
সৌদি আরবের প্রধান তিনটি শহরের সবগুলোতেই বাড়তি ফ্লাইট যুক্ত হতে যাচ্ছে। জেদ্দায় সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট থেকে বাড়িয়ে সাতটি করা হবে। রিয়াদে সপ্তাহে ছয়টি ফ্লাইট থেকে বাড়িয়ে সাতটি করা হবে। আর দাম্মামের ক্ষেত্রে সপ্তাহে ফ্লাইট সংখ্যা হবে এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ। এখন চালু থাকা তিনটি ফ্লাইটের স্থলে ছয়টি ফ্লাইট হবে। গুরুত্বপূর্ণ এ পরিবর্তনগুলোর ফলে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স জেদ্দা ও রিয়াদ উভয় শহরে প্রতিদিনই ফ্লাইট পরিচালনা করবে। পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিনই ফ্লাইট থাকবে দাম্মামে।
দাম্মামের বাড়তি ফ্লাইট চালু হবে আগামী ২৯ মার্চ থেকে। একইসঙ্গে বর্তমানে চালু থাকা প্রতি সপ্তাহে তিনদিন ঢাকা-দাম্মাম-ঢাকা ফ্লাইটও অব্যাহত থাকবে। এর সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা-দাম্মাম-কুয়েত-ঢাকা রুটে তিনটি বাড়তি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যেই জেদ্দা ও রিয়াদের বাড়তি ফ্লাইট চালু করা হবে। এর ফলে প্রতি সপ্তাহে সৌদি আরবে বিমানের পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। সৌদি আরবের সবগুলো ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে বড় আকারের ওয়াইড বডি এয়ারক্রাফট দিয়ে।
এদিকে, কুয়ালালামপুর রুটেও ফ্লাইট সংখ্যা বাড়াচ্ছে বিমান। বর্তমানে মালয়েশিয়ার রাজধানীতে দিনে একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান। আগামী ২৯ মার্চ থেকে এ সংখ্যা বাড়িয়ে প্রতি সপ্তাহে ১০টি ফ্লাইট করা হবে। রুটের চাহিদা অনুযায়ী এটাকে আরও শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। বাড়তি ফ্লাইটে গ্রাহকদের জন্য আরও বেশি সুযোগ সুবিধা ও নমনীয়তা থাকবে এবং বিমানের সঙ্গে ভ্রমণের পরিকল্পনা হবে আরও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ।
ভারতের কলকাতায় প্রতি সপ্তাহে ১৪ বার সংযুক্ত হতে যাচ্ছে বিমান। ঢাকা-কলকাতা রুটে প্রতি সপ্তাহে ১২টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ দিনই ফিরতি ফুল ডে ট্রিপের সম্ভাবনা থাকবে। ইকোনমি ক্লাসের ৭৪ আসন বিশিষ্ট ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ দিয়ে এসব ফ্লাইট পরিচালিত হবে। দু’টি বোয়িং ৭৩৭ ব্যবহৃত হবে কলকাতার সঙ্গে চট্টগ্রামকে যুক্ত করতে।
এ বিষয়ে বিমানের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, লোকসানি রুটে ফ্লাইট চালু রাখা মানেই বিমানের বোঝা বাড়ানো। তাই লোকসানি রুটসমূহ বন্ধের পক্ষেই আমরা। লাভজনক রুটে ফ্লাইট বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানকে আরও লাভে নিয়ে আসাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
বাংলাদেশ সময়: ০২১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৫