আখেন, জার্মানি থেকে: দেশের পতাকাবাহী রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা ‘বাংলাদেশ বিমান’র জন্য ইউরোপজুড়ে হাহাকার দেখা গেছে প্রবাসীদের মধ্যে। একসময় ব্রাসেলস, রোম, মিলান ও প্যারিস থেকে ঢাকায় বিমানের ফ্লাইট চালু থাকলেও, বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে।
প্রবাসীরা জানান, বিমান লোকসানের অজুহাত দিয়ে ফ্লাইট বন্ধ করলেও, রুটগুলো মোটেও লোকসানি ছিলো না। আমরা কখনও ফোন করে বা অফিসে গিয়ে বিমানের টিকিট পাইনি। অথচ বিমান খালি গেছে। এ এক রহস্যময় বিষয়।
তারা বলেন, আমাদের বলা হতো সিট নেই। তাহলে খালি যায় কেন, আবার লোকসানিই বা হবে কেন! আসল বিষয় হলো, যাত্রী না নিয়ে বিমানকর্মীরা চোরাই পণ্য ও অবৈধ কার্গো পরিবহনে বেশি মনোযোগী ছিলেন।
ব্রাসেলসের ব্যবসায়ী নুরুল হুদা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রবাসীরা চাইতাম দেশের ফ্লাইটেই দেশে ফিরবো। কিন্তু টিকিট পেতাম না। এমনিতেই কিন্তু অন্য এয়ারলাইন্সের চেয়ে বিমানের টিকিটের দাম কমপক্ষে ১শ ইউরো বেশি এবং যাত্রীসেবার মান খুবই নিম্নমানের ছিলো। তারপরও প্রবাসীরা দেশের পতাকার কথা চিন্তা করে বিমানে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। কিন্তু তারা টিকিট পেতেন না।
তিনি বলেন, ব্রাসেলস বিমানবন্দর বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। সেখানে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিআইপি অফিস ছিলো। অথচ সেই অফিসের কর্মীরা যাত্রীদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করতেন, যেনো কেউ আর সেদিকে না যান। মূলত তারা চাইতেন, যাত্রী যতো কম হবে, অবৈধভাবে তারা ততো কার্গো বহন করে লাভবান হবেন।
এদিকে, প্যারিস প্রবাসী ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, প্যারিস থেকে বিমানের যে ফ্লাইট যেতো তাতে সুই ফেলারও জায়গা থাকতো না। অথচ ঢাকায় কাগজ পাঠানো হতো, বিমান খালি যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কর্মচারীরা কারসাজি করে টিকিট বিক্রি করে তার কোনো প্রমাণ রাখতেন না। এখন বিমান নেই, কিন্তু প্যারিসে চাকরি করা বিমানের সেই কর্তারা কিন্তু দেশে ফেরত যাননি। তারা ইউরোপেই রয়ে গেছেন।
প্রবাসীরা জানান, ইউরোপে এখন বাংলাদেশিদের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতে ব্রাসেলস, রোম, মিলান, প্যারিস, ফ্রাঙ্কফুট ভবিষ্যতে লন্ডনের পর্যায়ে পৌঁছাবে এবং এর দেরিও নেই। তাই এসব রুটে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট প্রয়োজন। তবে তার আগে বিমানের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হবে। সৎ কর্মীদের বদলি না করলে এখানে ফ্লাইট চালু করে লাভের মুখ দেখা যাবে না। এতে লাভবান হবেন শুধু টিকিট এজেন্ট আর ওই কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ বিমান বহরে নতুন নতুন ক্যারিয়ার ও রুট যোগ হওয়ায় প্রবাসীরা আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। নতুন ব্যবস্থাপনায় তারা দেশের পতাকাবাহী উড়োজাহাজেই ফিরবেন প্রিয় জন্মভূমিতে, এমনটিই আশা। এর মধ্য দিয়েই তারা খুঁজতে চান, ‘আকাশে শান্তির নীড়’- বিমানের এই স্লোগানের মর্মার্থ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৬
আরএম/এসএস
** কূটনীতিতে মন নেই ব্রাসেলস দূতাবাসের
** ব্রাসেলসের আলোর উৎস(ভিডিও)
** ব্রাসেলসে প্যারিস হামলার প্রভাব
** বাংলাদেশি সব পণ্যই মেলে বেলজিয়ামে