ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

বিমানের গুদাম থেকে আরও ৭ হাজার মোবাইল চুরি!

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১১ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৭
বিমানের গুদাম থেকে আরও ৭ হাজার মোবাইল চুরি! বিমানের কার্গো ভিলেজ/ফাইল ফটো

ঢাকা: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজের গুদাম থেকে আরও ৬ হাজার ৭৯৪টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়েছে। চুরির বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা কাস্টমস্‌ হাউসকে সম্প্রতি চিঠি দিয়ে অবহিত করেছে বিমান।

কাস্টমসের নির্ভরশীল সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, বিমানের কমাশির্য়াল অফিসার (আমদানি) মির্জা হাসান তারিক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বিমানের নবনির্মিত ডিসপোজাল শেডে ইনভেনট্রিকৃত ২২টি ব্র্যান্ডের ১ লাখ ১ হাজার ৮১৩টি মোবাইল রয়েছে। সেগুলো বিটিআরসি’র চাহিদা অনুসারে ব্র্যান্ডভেদে আলাদা করা আছে।

কিন্তু ৩ দফায় ৬ হাজার ৭৯৪টি মোবাইল চুরি হয়েছে।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে দেওয়া ঢাকা কাস্টমসের চিঠিতে বলা হয়েছে, গুদামে রাখা সকল পণ্যের জিম্মাদার হওয়ায় কোনো পণ্য হারিয়ে গেলে তার দায়ভারও বিমান কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। এক্ষেত্রে কাস্টমস্‌ কর্তৃপক্ষ কোনো দায়ভার নেবে না।

এর আগে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের ছুটির মধ্যে বিমানের গুদাম থেকে আরও প্রায় ৪ হাজারটি বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১১ হাজারের মতো মোবাইল ফোন চুরি হলেও বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কোনো সরকারি সংস্থাই এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ। আর এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি বিমান কর্তৃপক্ষ।

গুদামে বিমানের কর্মকর্তারা ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা দায়িত্ব পালন করে না। তবে ইনভেনট্রি করতে নির্ধারিত সময়ের জন্য কাস্টমসের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে বিমানের গুদামের বাইরে এপিবিএন, সিভিল অ্যাভিয়েশন, কাস্টমস্‌, বিমান সিকিউরিটি ও  আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। গুদাম থেকে যেকোনো পণ্য বের হতে বিমানের অনুমতির প্রয়োজন হয়। একইভাবে পণ্য বের হওয়ার সময় বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কোনো সংস্থার নজরে পড়লো না কেন- সেটি নিয়েও জনমনে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের আওতায় এয়ারলাইন্স ও যাত্রীদের লাগেজসহ বিভিন্ন সেবা এবং কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের আওতায় ব্যবসায়ীদের আমদানি-রফতানিতে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ১৯৬৯ সালের দ্য কাস্টমস অ্যাক্টের ১২ ধারা অনুসারে এসব সেবা দিতে লাইসেন্স বাধ্যতামূলক হলেও গত বছর পর্যন্ত বিমানের কোনো লাইসেন্স ছিলো না। বর্তমানে লাইসেন্স থাকলেও সংস্থাটি আইনের কোনো তোয়াক্কা করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা কাস্টমস্‌ অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর সম্পাদক মো. আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, বিমান তাদের ইচ্ছামতো কাজ করছে, নিয়মের কোনো তোয়াক্কাই করে না। ব্যবসায়ীদের কোনো পণ্য হারিয়ে যাওয়ার পর অবহিত করলেও কোনো সুফল মিলছে না। ফলে পণ্য হারিয়ে গেলে ব্যবসায়ীদেরকেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে।

ঢাকা কাস্টমস্‌ হাউসের যুগ্ম কমিশনার ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, বিমানের গুদামে থাকা মোবাইলগুলোর কোনো দাবিদার নেই। মোবাইল আমদানি করতে বিটিআরসি’র অনুমতি লাগে। কিন্তু সেগুলো আমদানিতে কোনো অনুমতি নেই। এছাড়া কোনো মোবাইল চুরি হলে তার দায়ভার বিমান কর্তৃপক্ষের। এখানে কাস্টমস্‌ কোনো দায়ভার নেবে না এবং চুরি হওয়া মোবাইল উদ্ধারে বিমানকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিমানের কমাশির্য়াল অফিসার (আমদানি) মির্জা হাসান তারিক বাংলানিউজকে বলেন, ‘গুদাম থেকে কিছু মোবাইল চুরি হয়েছে। এ বিষয়ে কাস্টমস্‌কে অবহিত করা হয়েছে। চুরি যাওয়া মোবাইল উদ্ধারে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি’।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১০ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৭
এসজে/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।