বিমান কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে আইও ট্যাক্স বাদ পড়েছিলো হজ প্যাকেজে। এমনটাই জানিয়েছে এজেন্সিগুলো।
মাওলানা আব্দুল জব্বারের মতো হয়রানির শিকার চলতি বছরে বিমান এয়ারলাইন্স-র উড়োজাহাজে করে হজে যেতে প্রস্তুত প্রায় ৬০ হাজারবাংলাদেশি।
এজেন্সিগুলোর কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যখন হজ্জ্ব প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়, তখন বিমানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোথায় ছিলেন?এই প্যাকেজতো সৌদি আরব হঠাৎ করে দেয়নি। গত নয় মাসেও কেন নিজেদের করা এই ভুল বিমানের চোখে ধরা পড়ল না?। এখন হঠাৎই তিন হাজার টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে আইও ট্যাক্সের জন্য ১ হাজার টাকা ও ২৫ ডলার বিমানভাড়া বাড়ানোতে আরো ২ হাজার টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। অনেক নিম্নবিত্ত মানুষ জমি, বাড়ির গাছপালা বিক্রি করে হজে যাওয়ার টাকা জোগাড় করেছেন। এখন আবার ৩ হাজার টাকা চাওয়া মানেই তাদের ওপর বড় চাপ দেয়া।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, হজ্জ্ব প্যাকেজ ঘোষণার পর তার কপি দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই। হজ প্যাকেজ ২০১৭ এর ঢাকা-মদিনা-ঢাকা এর বিমান ভাড়া ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৭২৩ টাকা। এর মধ্যে নিট ভাড়া ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৩৩ টাকা। আর বাদবাকি টাকা ৯টি খাতে ট্যাক্স ও ডিউটি বাবদ নির্ধারিত হয়। এর কপি হজ প্যাকেজ ঘোষণার পরপরই বিমানকে দেয়া হয়। কিন্তু এই প্যাকেজে বিমানভাড়া ক্যাটাগরিতে সৌদি আরবের যে আইও ট্যাক্স বাদ পড়েছে, তা ৯ মাসেও ধর্ম মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষকে অবহিত করেনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
এদিকে ফ্লাইটের মাত্র কয়েক দিন আগে বাড়তি ৩ হাজার টাকা জমাদানের বিষয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন এজেন্সির কর্মকর্তা ও হজযাত্রীরা। এসব বিষয়ে বিমানের ওপর ক্ষুব্ধ এজেন্সিগুলোর কর্মকর্তারাও।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র (হাব) এর কোষাধ্যক্ষ মাওলানা ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিমান হঠাৎই ৫ জুলাই আমাদের চিঠি দিয়ে জানায় যে, বিমান ভাড়াবাবদ আরো ৩ হাজার টাকা বাড়তি দিতে হবে। চিঠিতে আইও ট্যাক্স বাবদ ১ হাজার টাকার কথা লেখা আছে। আইও ট্যাক্সতো নতুন কিছু নয়। তারা আগে কেন জানালেন না! আর হঠাৎই তারা চিঠি দিয়ে ২৫ ডলার ভাড়া বৃদ্ধি করেন। এখন বিমান থেকে যে ৩ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে তা অনেক যাত্রীই বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না। তাদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে আমাদের। অনেক যাত্রীর আবার বাড়তি তিন হাজার টাকা দেয়ার ক্ষমতাও নেই। বিমানের মতো একটি সরকারি সংস্থা এ ধরনের ভুল কী করে করতে পারে তা আমরা বুঝতে পারছি না। ‘
তবে এসব বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ বিমান কর্তৃপক্ষ। বিমানে গণসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার শাকিল মেরাজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। ‘
হজ অফিস ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। দুইটি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে যাবেন যাত্রীরা। এয়ারলাইন্স দুইটি হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী যাবেন বিমান এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে। আগামী ২৪ জুলাই হজের ফ্লাইট শুরু হবে। ৪১৯ জন হজযাত্রী নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি ১০১১) প্রথম হজ ফ্লাইটটি ২৪ জুলাই সকাল ৮টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৭
ইউএম/জেএম