বিমান তখন প্রায় ১৭ হাজার ফিট উচ্চতায়। ধৈর্য় আর নেই শিশুটির।
মায়ের কথা সবার আগে বুঝতে পারে শিশুরা। হলোও তাই। থামলো কান্না। এক গাল মনভোলানো হাসি। আপন মনে মায়ের সাথে খেলে চললো শিশুটি। ছুটে আসেন ক্রুরা। আবার বাঁধন পড়লো শিশুটির কোমরে। মনে হচ্ছিল একরাশ কান্নার মধ্যে দিয়ে, ক্রুটির দিকে বিরক্তি ছুড়ে দিচ্ছিল সে।
অবশেষে মায়ের আবদারে মুক্তি। খোলা হলো বাঁধন। মায়ের উন্মুক্ত হাত বসলো সিটের ওপরে। এবার যে কাজটি করলো শিশুটি, আমার মত অন্যান্য আরোহীরা না হেসে থাকতে পারলো না। সরাসরি ক্রুটির দিকে হাত দেখিয়ে- টাটা। বুলিহীন শিশুটি তাদের জানান দিলো তোমরা যেতে পারো; আমি মায়ের কাছে নির্ভয়ে আছি। হাসিমুখে ক্রুর চলে যাওয়া ছাড়া উপায় কি! শুধু বলে গেল, নাস্তা আসছে দয়া করে ওকে আসনে বসান।
১৫ মিনিটি বাদে এলো নাস্তা। ভালো লাগলো না আমার মতোই তারও। বাঙলার বিমান, বাঙলার আকাশে, যাত্রীও সব বাঙালি। তাহলে পশ্চিমি আদলে খাবার কেন? স্বল্প পথের জার্নি, তাতে কি? সকালের নাস্তাটায় একটু বাঙালিয়ানা থাকলে ক্ষতি কিসের? আমরা তো আর পশ্চিমি কেতার বাঙালি নই!
ককপিঠ থেকে ক্যাপ্টেন আকবরের কন্ঠ ভেসে এলো। আকাশে আরও ষোলোটি বিমান আছে। আমাদের বিমান সতেরো নম্বরে। তাই আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে নেতাজী সুভাষচন্দ্র আন্তজার্তিক বিমানবন্দর, মানে কলকাতায় অবতরণ করতে।
হোক না দেরি তাতে কি, আমি তো খেলছি মায়ের সাথে। স্বাচ্ছন্দ্যেই আছি রিজেন্ট এয়ারওয়েজের মধ্যে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
জেএম