ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রীর উপহার: বিমান প্রতিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২০
সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রীর উপহার: বিমান প্রতিমন্ত্রী বক্তব্য রাখছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী

সিলেট: সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন, আকাঙ্খা অবশেষে পূরণ হলো। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চালু হলো সরাসরি সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট।

রোববার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রীর উপহার। তারই নির্দেশেই সিলেট থেকে লন্ডন বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। সিলেটবাসী এর সুফল ভোগ করবেন। এখন থেকে সিলেটবাসী আর কষ্ট করে ঢাকায় গিয়ে লন্ডন যেতে হবে না। সিলেট থেকে সরাসরি লন্ডন যাবেন।

মাহবুব আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বাংলাদেশ বিমানের নামকরণও করেছিল তিনি। তারই যোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আমাকে বিমানের দায়িত্ব দিয়ে বলেছিলেন বিমানের অনেক বদনাম, অনেক নেতিবাচক সংবাদ পাচ্ছি। আমি আর শুনতে চাই না। তাই দায়িত্ব নেওয়ার পর বিমানে শুদ্ধি অভিযান চালিয়েছি। এরপর বিমান ২০০ কোটি টাকা লাভ করেছে।  

যেহেতু সিলেটের বেশি সংখ্যক মানুষ প্রবাসে বসবাস করে। তাই দেশের সঙ্গে প্রবাসের একটি যোগসূত্র গড়ে তুলতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর এ যোগসূত্র হিসেবে কাজ করবে সিলেট লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট। যেহেতু সিলেট-লন্ডন ফ্লাইটের ৯০ শতাংশ যাত্রী সিলেটের। তাই সিলেটে যাতে বোয়িং-৭৭৭ উঠা-নামা করতে পারে এবং যত শিগগিরই হিথ্রোতে সরাসরি বিমান চলাচল করতে পারে, সে ব্যবস্থাও করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা রাত-দিন কাজ করে বুয়েটের ২০ জন বিশেষজ্ঞ সিলেটে থেকে এপ্রিলের মধ্যেই আমরা রানওয়ের ক্যাপাসিটি বাড়িয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল এপ্রিলের ১ তারিখ যাতে সিলেট থেকে হিথ্রোর উদ্দেশে বিমান উড়াল দেয়। আমরা সমস্ত প্রস্তুতি নিয়েছি। ওসমানী বিমান বন্দরের রানওয়ের শক্তি বাড়িয়েছি। কীভাবে হিথ্রোতে বিমান যাওয়ার ব্যাপারে সহযোগী হয়, সেজন্য ডিপার্টমেন্ট ফর ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি)’র প্রতিনিধি দলকে দু’বার ঘুরিয়ে দেখিয়েছি। তাদের মতামত নিয়ে আমরা সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যাতে পরবর্তীতে কোনো অভিযোগ না আসে, যে এসব কারণে তারা অনুমতি দিচ্ছেন না।

তিনি বলেন, সিলেট বিমানবন্দরের সড়কের দু’পাশে চা বাগান, মনোরম পরিবেশ। এতো সুন্দর সড়ক পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এ সড়ক কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেবেন না। সিলেটের মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবাসে, তাই চারটি মন্ত্রণালয় দিয়েছেন তিনি।

মাহবুব আলী বলেন, আমি আশাবাদী সিলেট বিমানবন্দর হবে যুগের চেয়েও আধুনিক। আর ওসমানী বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের কোনো গাফিলতি পেলে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে বিমান ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সিলেট থেকে এখন বিভিন্ন বিমানের ফ্লাইট চলাচল করবে। তাছাড়া সিলেট-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ফ্লাইট শিগগিরই চালু করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান বলেন, বিমানের সুন্দর সুন্দর নামগুলো প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া। তিনি বিমানে যাত্রা করলে সিট থেকে উঠে গিয়ে যাত্রীদের খবর নেন।

তিনি বলেন, সবকিছুর পর বিমানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এরপরও অত্যাধুনিক বিমান বহরে যুক্ত করে সেবা দিতে বদ্ধ পরিকর। তবে সরকারের পাশাপাশি এটাকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, এ যাবৎ ৫৩টি দেশের সঙ্গে বিমান চলাচলের চুক্তি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুও স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি এভিয়েশন হাব হবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশনায় সপ্তাহে একটি ফ্লাইট সিলেট থেকে ও একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে যাবে। এজন্য কোনো অথরিটি পারসন ছাড়া সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢোকা নিষেধ। কেউ ঢুকলে এটা রেকর্ড হবে এবং গাফিলতির কারণে ফের সরাসরি বিমান চলাচল বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। বিমান বহরে এ পর্যন্ত ১৩টি অত্যাধুনিক প্লেন যুক্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এসময় সিলেটবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযাদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠান শেষে সিলেট-লন্ডন ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিরা। এদিন বিজি-০০১ বিমানের ফ্লাইটে সিলেট থেকে ১৮২ জন এবং ঢাকা থেকে আরও ৫৬ জন যাত্রী বিমানে লন্ডন গেছেন বলেও জানিয়েছেন ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ।

বিমান সূত্র জানায়, বিমানের মোবাইল অ্যাপস, সব সেলস সেন্টার, ট্রাভেল এজেন্ট, বিমানের ওয়েবসাইট www.biman-airlines.com ও বিমানের কল সেন্টার (০১৭৭৭ ৭১৫৬১৩-১৬) থেকে সিলেট-লন্ডন-সিলেটসহ বিমানের সব রুটের সিডিউল ফ্লাইটের টিকিট কেনা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২০
এনইউ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।