কক্সবাজার: পবিত্র মাহে রমজান আর গরমের তীব্রতায় গত প্রায় একমাস যাবত অনেকটাই পর্যটক শূন্য কক্সবাজার। যে কারণে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের চিরচেনা দৃশ্য পাল্টে এখন চোখে পড়ে সুনসান নিরবতা।
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মায়াবী এই আহ্বানেই সৈকতের সেই নিরবতা ভাঙবে এবারের ঈদুল ফিতরের ছুটিতে। লাখো পর্যটকের সমাগমে মুখর হয়ে ওঠবে সমুদ্র সৈকত। এমন আশাবাদ হোটেল-মোটেল মালিকসহ পর্যটন ব্যবসায়ীদের।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বাংলানিউজকে জানান, কক্সবাজারকে নিয়ে অপপ্রচার, করোনা মহামারি, মাহে রমজান, গরমের তীব্রতাসহ নানা কারণে কক্সবাজারে গত মাস দেড়েক ধরে পর্যটক শূন্য।
বিশেষ করে একদিকে মাহে রমজান চলছে, অন্যদিকে খুব বেশি গরম। যে কারণে সৈকতে গেলে দেখা যায় জনমানব শূন্য।
‘তবে আমরা আশা করছি, এবারের ঈদের ছুটিতে এই পর্যটনে এই ক্ষরা কেটে যাবে। ঈদের ছুটি লম্বা হওয়ায় কক্সবাজারের পর্যটনে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে’- যোগ করেন হোটেল মালিক সমিতির এই নেতা।
আবুল কাশেম সিকদার আরও জানান, বর্তমানে কক্সবাজারে চার শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্টহাউস রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ ভাগের বেশি বুকিং হয়ে গেছে। ঈদ আসতে আসতে শতভাগ হয়ে যাবে।
কক্সবাজার হোটেল কক্সভিউয়ের জেনারেল ম্যানেজার ডা. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে অতিথিদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। বুকিংও আসা শুরু করেছে, আশা করছি, এবার পর্য়টকদের ভাল সাড়া পাওয়া যাবে।
ভাঙবে নীরবতা: শুক্রবার দুপুরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে দেখা যায় ,অনেকটা পর্যটক শূন্য। সৈকতজুড়েই সুনসান নিরবতা। গুটি কয়েক পর্যটককে দেখা যায় তারা সমুদ্র স্নান করছেন। সমুদ্র সৈকতের এমন নিরবতায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা কিছুটা হতাশ।
লাবনী পয়েন্টে এক লাইভগার্ড কর্মী জানান, এমন অবস্থা চলছে মাস দেড়েক ধরে। তারভাষ্য, এখন ভর দুপুর, তাই পর্যটক শূন্য, বিকেলের দিকে কিছু পর্যটক নামেন। তবে তা মোটেও আশানুরূপ নয়।
সৈকতে নুরুল আবছার নামে এক কিটকট ব্যবসায়ী বলেন, এখন যা ব্যবসা হচ্ছে তাতে ছেলেদের বেতনও হয় না। পর্যটক নেই বললেই চলে। আশা করি ঈদের ছুটিতে এই নিরবতা কেটে যাবে, ভাল ব্যবসা হবে।
প্রশাসন যা বলছে: কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের সুপার (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সৈকত এবং আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশের টহল রয়েছে। এছাড়া বিশেষ দিনগুলোতে বিশেষ করে পর্যটকরা যাতে কোনো ভোগান্তির শিকার না হন, নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আছে। শুধু তাই নয়, সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের জন্য খাবার পানি এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাও দেওয়া হয়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ড. মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, এবারের ছুটি যেহেতু লম্বা, তাই পর্যটক সমাগমও বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে। এই পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করছি, যাতে পর্যটকরা ভাল সেবা পান, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন।
যে কোনো ধরনের অনিয়ম রোধ, পর্যটক হয়রানি বন্ধ এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সৈকত এবং আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২,২০২২,
এসবি/এমএমজেড