ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আওয়ামী লীগ

সরকার খুতবা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, এটা অপপ্রচার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৬
সরকার খুতবা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, এটা অপপ্রচার

ঢাকা: আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে কেবল খুতবায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, সরকার থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি, আর সরকারের সে ধরনেরও কোনো ইচ্ছে নেই। কিন্তু মিশর, তুরস্কসহ অনেক দেশেই সব মসজিদে একই খুতবা পাঠ করতে হয়।

শনিবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ কর্তৃক ‘ইসলামের আলোকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে দেশের বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, ওলামা-মাশায়েখ এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের বিভিন্ন ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা অংশ নেন।  

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। কিন্তু আমাদের দেশে জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশে গুপ্তহত্যা, জঙ্গি হামলাকে আইএসের নামে ব্র্যান্ডিং  করানো অপচেষ্টা করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের প্রত্যক্ষ আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং অর্থায়নে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদের জঙ্গি এসব কর্মকাণ্ডে করছে যাতে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী এদেশে নাক গলাতে পারে এবং সে সু্যোগে বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে এইচটি ইমাম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০০১-০৬ ছিল এ দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের সোনালী সময়। হাওয়া ভবনে সরকারের প্যারালালে আরেকটি সরকার গঠন করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপিত হয়।  

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ৭১-এর পরাজয় এখনো মেনে নিতে পারেনি। তাই এখনো আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পাকিস্তানে আলোচনা-মন্তব্য করা হয় এবং তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এ দেশে কারা কথা বলে তা সবার কাছেই জানা।  

‘বিএনপি বলছে দেশে নাকি আরেকটি নির্বাচন দিলে গুপ্তহত্যা, জঙ্গি হামলা বন্ধ হয়ে যাবে। তাদের কথাতেই প্রতীয়মান কারা এবং কোন উদ্দেশে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। ’

ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদ জামাতের খতিব মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ তার বক্তব্যে বলেন, প্রিয়নবী রাসুল (স.) যেখানে শুয়ে আছেন, সেই মসজিদে নববীতে ঈদ জামাতে যারা হামলা করেছে তাদের সঙ্গে কোনভাবেই ইসলামের সম্পর্ক থাকতে পারে না। এটা ব্যাখ্যার জন্য কোনো কুরআন-সুন্নাহর প্রয়োজন নেই। এরা ইসলাম ও মানবতার ঘোরতর শত্রু, তা তাদের আচরণেই স্পষ্ট।  

মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কিছু প্রস্তাবনা রাখেন। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাসে অন্তত একবার হলেও ইসলাম ও জঙ্গিবাদ নিয়ে আলাদা ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে। সন্তানের সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পর্ক হতে হবে হৃদ্যতাপূর্ণ।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, পবিত্র কোরআন শরীফ বুঝতে হলে ইসলামি পরিজ্ঞান থাকতে হবে। মাদ্রাসা ছাত্রদের উপরে জঙ্গিবাদ বেশি বিস্তার করে না। কারণ তারা কিছুটা হলেও ধর্মীয় জ্ঞান রাখে। তাই জঙ্গি দলগুলো এখন তাদের টার্গেট গ্রুপ পরিবর্তন করেছে। তারা ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের টার্গেট করেছে। যাদের মধ্যে নূন্যতম ইসলামি জ্ঞান নেই তাদের সহজেই জঙ্গি বানানো যাচ্ছে।

ইসলামি ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মেজবাউর রহমান চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে দেশের আলেম সমাজকে নিয়ে ঢাকায় মহাসমাবেশ করতে হবে। প্রয়োজনে আলেমদের নিয়ে একটি সেল গঠন করে দেশের বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামি পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা করতে হবে।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম। এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দিন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৬
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আওয়ামী লীগ এর সর্বশেষ