শনিবার (০৭ জানুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ছাত্র সমাবেশে একেকজন বক্তা যখন বক্তৃতায় মুখে ফেনা তুলছেন তখনও ব্যতিক্রম সরকারের প্রভাবশালী এ মন্ত্রী।
সাড়ে ৬ মিনিটের বক্তৃতায় স্পষ্ট ভাষায় বললেন, বক্তৃতা এ ধরনের অনুষ্ঠানে দেওয়ার সুযোগ থাকে না।
ছাত্র সমাবেশে দুজন সংসদ সদস্য (এমপি), মন্ত্রী তাদের বক্তৃতা আত্মত্যাগ করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জন্য। ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সিনিয়র সহকর্মী।
নাজিম উদ্দিন যখন বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তখন সৈয়দ আশরাফ সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
সেই কথা উচ্চারণ করে নাজিম উদ্দিন আহমেদ নিজের বক্তৃতাও আত্মত্যাগ করে বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের জন্য আমার বক্তব্য সেক্রিফাইস করলাম। আপনারা তার বক্তব্য শুনেন। ’
সমাবেশের উদ্বোধক প্রবীণ রাজনীতিক, ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানও একইভাবে বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফ আমার ছেলের মতো। আমি সবসময় বক্তব্য রাখি। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সে আসতে পারেন না। তার জন্য সময় করে দিলাম। ’
‘কম কথা গুছিয়ে সবসময় আসল কথাই বলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী। তার বক্তৃতা সবসময় রাজনৈতিক মেধা, প্রজ্ঞা, বিবেচনা, স্থিরতা ও দূরদর্শিতার স্পষ্ট ছাপ থাকে,’ উচ্ছ্বাস ভরা কণ্ঠে বলছিলেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিব।
বিশাল এ ছাত্র সমাবেশেও সৈয়দ আশরাফুলের সময়ানুবর্তিতা সবাই এক বাক্যে প্রশংসা করেন।
পরে কম কথায় অনেক কথা বলতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের সাবেক এ সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ‘ছাত্রলীগ জাতির সম্পদ। আমি নিজেও ছাত্রলীগ থেকে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। ছাত্রলীগ থেকেই অজস্র জাতীয় নেতার সৃষ্টি। এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরাই আগামী দিনের মন্ত্রী, এমপি, সিটি মেয়রসহ জাতীয় রাজনীতিতে ওঠে আসবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে ছাত্রলীগ অগ্রদূত হিসেবে কাজ করেছে। ’
ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ময়মনসিংহে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশকে মিলন মেলা উল্লেখ করেন মন্ত্রী। নিজের ছাত্র রাজনীতির স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘নাজিম ভাই যখন সভাপতি, আমি তখন বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি। ’
ছাত্রলীগের সঙ্গে নিজের নিবিড় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে আবেগতাড়িত কণ্ঠে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা বলেন, ‘আমার প্রয়াত ছেলে মাহবুবুল হক শাকিল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছিলেন। ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করতে তিনি সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন। ছেলেকে হারিয়ে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তবে আমার সামনে যারা আছেন (ছাত্রলীগের তরুণ নেতারা), তারা সবাই আমার শাকিল। এ নিয়েই আমি বেঁচে থাকবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ০১০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৭
আইএ