মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) রাতে আওয়ামী লীগের বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক’ এর একাদশ পর্বে ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় সঠিক তথ্যপ্রবাহ’ শীর্ষক আলোচনা বক্তারা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে কথা বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাত, একাত্তর টিভির কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর মিথিলা ফারজানা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
সঙ্কটে গণমাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত, করোনা বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রচার ও সরবরাহ, দুর্যোগ মোকাবিলায় সঠিক তথ্য প্রচারে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয় এবারের পর্বে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা সঙ্কটের শুরু থেকে আমার সুরক্ষা আমার হাতে এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল মানুষের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা।
তিনি বলেন, সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের মাধ্যমে জনগণ যাতে নিজেকে সুরক্ষা রাখতে পারে, সচেতন রাখতে পারে, সেই তথ্যটা পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সচেতনতামূলক প্রচারণা এবং গুজবের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য প্রচার করা হয়েছে।
করোনা সংকটকালে বিরোধী দল মানুষের পাশে না থেকে নেতিবাচক রাজনীতির চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিশ্বের সবাইকে এই সময়ে দুটি মহামারি মোকাবিলা করতে হচ্ছে, একটি করোনা ভাইরাস মহামারি, অপরটি মিথ্যা অপপ্রচারের মহামারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারকে এই দুটি সংকটের সঙ্গে আম্পান নামের একটি ঘূর্ণিঝড়ও মোকাবিলা করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, সংকটের শুরুতেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলাম যেখানে করোনা সংকট মোকাবিলায় জনগণকে সচেতন করতে এবং কোন এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ, পাবলিক প্রেসক্রিপশন, কোন এলাকায় হাপাতালের সংখ্যা কত ও সেলফ টেস্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ছিল। সারাদেশে মানুষের দোরগোড়ায় ইন্টারনেট পৌঁছে যাওয়ার ফলে অবাধ তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে করোনা সংকট মোকাবিলা সহজ হয়েছে।
অনিবন্ধিত কোনো ওয়েবসাইট বা নিউজ সাইটের কোনো তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম থেকে নিশ্চিত না হয়ে বিশ্বাস না করতে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সঠিক তথ্য সমাজে আলোর ভূমিকা পালন করে। এই করোনা সংকটের সময় সঠিক তথ্যই আমাদের পথ দেখাচ্ছে, তথ্যভ্রান্তির এই যুগে বস্তুনির্ভর তথ্যই আমাদের আলোর পথে নিয়ে যেতে পারে। করোনা সংকটের সময়ে আমরা দেখেছি, কোনো কোনো অনিবন্ধিত সংবাদপত্র থেকে বা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরাসরি অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
গুজবের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্যপ্রবাহের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ও গনমাধ্যমকর্মীদের আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান আরেফিন সিদ্দিক।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাত বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিগুলোর জনগণের মধ্যে গুজব তৈরি এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় একটা উপযোগিতা আছে। এখন নতুনভাবে তারা স্যোশাল মিডিয়া এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। মূলধারার গণমাধ্যম গুজব ঠেকানোর জন্য এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে।
যেকোনো তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতকরণে এবং তা একযোগে সব গণমাধ্যমকে জানানোর জন্য একটি সুনির্দিষ্ট উৎস থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন একাত্তর টিভির কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর মিথিলা ফারজানা।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ছাত্রলীগ বৃহত্তর ছাত্র সংগঠন হিসেবে প্রথম থেকে গুজব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং আমরা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফরমে যে গুজবগুলো সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলোর সঠিক খবর মানুষের মাঝে ছড়ানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
এসকে/এমইউএম/এইচএডি