মানামা: বাহরাইনের বাংলাদেশ দূতাবাসে এখন মাত্র ২৫ দিনেই মিলছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বা ডিজিটাল পাসপোর্ট। ২০১২ সালের শেষ দিকে এখানে এ কার্যক্রম শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে চলছে।
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইকাও) নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৫ সালের নভেম্বরের মধ্যে সব প্রবাসীকে ডিজিটাল পাসপোর্ট করার উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। বাহরাইন দূতাবাসের কর্মকর্তারাও প্রবাসীদের হাতে লেখা পাসপোর্ট পরিবর্তন করে নিরাপদ ও আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ডিজিটাল পাসপোর্ট নেওয়ার আহবান জানাচ্ছেন।
ডিজিটাল পাসপোর্টের আবেদন করতে হয় অনলাইনে। স্বল্প শিক্ষিত ও সাধারণ শ্রমিকদের আবেদনের সুবিধাথে দেশব্যাপী নির্দিষ্ট কিছু ইন্টারনেট দোকানে অনলাইনে আবেদনের অনুমতি দেয়া হয়েছে ।
দূতাবাসের ব্যবস্হাপনায় নির্ভূল আবেদন ও টোকেন দিতে দোকানিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। অনলাইনে আবেদন ও টোকেন দিতে ২.৫ দিনার (৫১২ টাকা) ফি নেয়া হচ্ছে যা অতিরিক্ত মনে করছেন প্রবাসী শ্রমিকরা । ডিজিটাল পাসপোর্টের জন্য সাধারণ প্রবাসীদের কাছ থেকে ১৩ দিনার (২৬৬৫ টাকা) এবং ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ উচ্ছপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ৪১ দিনার ৫০০ ফিলস (৮৫০৮ টাকা) নেয়া হচ্ছে। উভয়ের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ (বার্থ সার্টিফিকেট) না থাকলে আরও দুই দিনার নেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের সচিব মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ২১ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে প্রবাসীদের ডিজিটাল পাসপোর্ট দিচ্ছি, অন্য কোন দূতাবাস এতো স্বল্প সময়ে এটি করতে পারছে না, এজন্য আমাদের কর্মীরা দুই শিফটে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। দূতাবাসে এ পর্যন্ত ৩৮,৭০০ জন ছবি, ফিঙ্গার ও ডিজিটাল স্বাক্ষর দিয়েছেন। এর মধ্যে ৩৬, ০০০ এরও বেশি পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে।
ডিজিটাল পাসপোর্টের কাউন্টারে দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তা মহসিন কবির বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন অনলাইনে গড়ে ১৫০ টি টোকেন দেয়া হয় এবং তাদের ফিঙ্গার, ছবি ও ডিজিটাল স্বাক্ষর নেয়া হয়।
তিনি বলেন,মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের কাজটি কয়েকটি পর্যায়ে হয়ে থাকে। প্রথমে ডিজিটাল পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন ও ছবি তোলার তারিখ সম্বলিত টোকেন সংগ্রহ করতে হয়, তারপর সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত একটি দিনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি ও ডিজিটাল স্বাক্ষর নেওয়া হয়। ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়ার পরে পাসপোর্টের অফিসিয়াল প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সর্বশেষে সেই পাসপোর্টটি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং প্রিন্টিং শেষে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ বিমানযোগে তা দূতাবাসে আসে।
এরপর দূতাবাসে পাসপোর্টের নাম ও ঠিকানা মিলিয়ে দেখা হয় এবং মেশিনে পরীক্ষা করে দেখা হয় এটি মেশিন রিডেবল কি না? তারপর পাসপোর্ট প্রার্থীর মোবাইলে মেসেজ দেয়া হয়। যার পাসপোর্ট তার কাছেই হস্তান্তর করা হয়।
ডিজিটাল পাসপোর্ট নেয়ার সময় অবশ্যই পুরনো পাসপোর্টটি সঙ্গে আনতে হয় এবং ডিজিটাল পাসপোর্ট এর সঙ্গে পুরনো পাসপোর্টটি সংযোগ করে দিতে হয়।
নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে আসা চট্টগ্রামের মামুন বাংলানিউজকে জানান, তিনি ২৯ অক্টোবর ছবি তুলেছেন এবং ২৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়েছেন।
ফিঙ্গারিং, ছবি ও ডিজিটাল স্বাক্ষরের জন্য বর্তমানে দুইটি কাউন্টার রয়েছে। আরও একটি কাউন্টার খোলা হলে ছবি তুলতে আসা লোকদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা না করে আরও দ্রুত সেবা দেয়া সম্তব।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪