ঢাকা: বিরূপ পরিস্থিতির কারণে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট তৈরি হয়।
এ নীতিমালার অধীনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অভিন্ন নীতিমালা করে নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত পরিস্থিতিতে বিরূপ আর্থিক অবস্থার কারণে খেলাপি হয়েছে- এমন ঋণ সমন্বয় বা ঋণের ১০ শতাংশ ফেরত দিয়ে নিয়মিত করতে পারবে।
সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা মানতে হবে
* এ নীতিমালা এক্সিট দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকসমূহ এক্সিট সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত হবে। ব্যাংক কর্তৃক প্রণীতব্য নীতিমালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সার্কুলারে বর্ণিত শর্তের চেয়ে নমনীয় কোনো শর্ত যুক্ত করা যাবে না।
* ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এরূপ বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের এক্সিট সুবিধা দেওয়া যাবে।
* বিদ্যমান ঋণ স্থিতির ন্যূনতম ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নগদে পরিশোধপূর্বক এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃক তা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।
* ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটি কর্তৃক এক্সিট সুবিধা অনুমোদিত হতে হবে। তবে মূল ঋণ সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এক্সিট সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অর্পণ করা যাবে।
*এ সুবিধার আওতায় সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২২ সালে জারি করা সার্কুলার বা সার্কুলার লেটারের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে, মওকুফযোগ্য সুদ পৃথক ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে এবং সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের পর ব্লকড হিসাবে রক্ষিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে গণ্য হবে।
*এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধসূচি প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের বেশি হবে না। তবে পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসঙ্গত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বাড়াতে পারবে।
আরও যেসব নির্দেশনা মানতে হবে
* এক্সিট সুবিধা নেওয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ঋণ সম্পূর্ণ শোধ না হওয়া পর্যন্ত এক্সিট পূর্ববর্তী ঋণের শ্রেণিমান বহাল থাকবে। খেলাপি ঋণগ্রহীতারা যথানিয়মে খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
* এ সুবিধা পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন হিসেবে গণ্য হবে না।
* এক্সিট সুবিধা নেওয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের আগ পর্যন্ত কোনো নতুন ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না।
* এক্সিট সুবিধার আওতায় অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বিআরপিডি সার্কুলার ০৪/২০২৪ এর নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে।
* ঋণের বিপরীতে যথানিয়মে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে এবং ঋণ সমন্বয়ের পূর্বে ঋণের বিপরীতে গৃহীত জামানত অবমুক্ত করা যাবে না। তবে, ব্যাংক, গ্রাহক ও ক্রেতা আগ্রহী হলে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে আলোচ্য ঋণের বিপরীতে বন্ধকীকৃত সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে ঋণ সমন্বয় করা যাবে।
* এক্সিট সুবিধা প্রাপ্তির পর গ্রাহক পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণ আদায়ে ব্যাংক প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেবে।
* ইসলামি শরিয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো উপরোক্ত নীতিমালা অনুসরণ করে তাদের নিয়মিত ও বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত বিনিয়োগ আদায় বা সমন্বয়ের ব্যবস্থা নিতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২৪
জেডএ/আরএইচ