ঢাকা: করোনা মহামারি, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা কারণে গত কয়েক বছরে উৎপাদন কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে ব্যাংক খাতের ঋণ ব্যবস্থাপনায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০২৩ সালে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের ৫৪ শতাংশই উৎপাদনমুখী শিল্পের। এর মধ্যে প্রায় ১৭ শতাংশ নিয়ে শীর্ষে তৈরি পোশাক খাত। এরপরই টেক্সটাইলের অবস্থান। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে এ হার সাড়ে ৫ শতাংশ।
শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনার সময় বিশ্বজুড়ে উৎপাদন ব্যাহত হয়। যোগাযোগ ভেঙে পড়ে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এ সময় বিশ্ব উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের উৎপাদন খাতেও।
তারা বলছেন, এসব কারণে উদ্যোক্তারা ঋণ নিয়ে সময়মতো ফেরত দিতে পারেননি। এতে তারা খেলাপি হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে ওঠে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে। লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটার কারণেও পরিস্থিতি নাজুক হয়। উৎপাদন খরচে এর সরাসরি প্রভাব পড়ে। এ কারণে অনেক উদ্যোক্তাই ঋণ নিয়ে সময়মতো ফেরত দিতে পারেনি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। আবার দাম বাড়ানোর পরও চাহিদামতো সরবরাহ মেলেনি। উদ্যোক্তারা বলছেন, এর ফলে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা পড়ে ব্যবসায়ীদের ওপর। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিলেও অনেক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, দেশের শিল্প-কারখানার সক্ষমতার অনেকাংশ অব্যবহৃত থেকেছে। এ অবস্থায় শতভাগ উৎপাদন না হলেও জ্বালানি ও জনবলের ব্যয় ঠিকই মেটাতে হয়েছে। আর দিন শেষে তা মালিকের মূলধন থেকেই যাচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের সে সক্ষমতাও কম। এ অবস্থায় তারা খেলাপি হচ্ছেন। সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষ পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২৪
জেডএ/আরএইচ