ঢাকা: শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ে সরকারের বেধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি আদায় করেছে রূপালী ব্যাংক। শ্রেণিকৃত, অবলোপনকৃত এবং অশ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের জন্য বিশেষ আদায় অভিযান পরিচালনা করায় এটি সম্ভব হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রূপালী ব্যাংককে ২০১৬ সালের জন্য শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেধে দেওয়া হয় ১৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে জুন মাসেই ১৬৬ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। শীর্ষ ২০ জন গ্রাহকের কাছ থেকেই বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। যা ব্যাংকিং ইতিহাসে নজিরবিহীন।
রূপালী ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য তথ্য মতে, ২০০৮ সালে শ্রেণিকৃত ঋণের হার ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় এক হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারের নির্দেশনায় এম. ফরিদ উদ্দিন ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ হ্রাসে কাজ শুরু করেন।
২০১০ সালে ঋণ কমে ৭৯০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১১ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৪৫৪ কোটি টাকায়। ওই সময় ব্যাংকের শ্রেণি ঋণের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসে। ব্যাংকের সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিনের কঠোর নেতৃত্বের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। তবে ঋণ শৃঙ্খলা জোরদার করার জন্য ২০১২ সালে সরকারের গৃহীত শ্রেণিকরণ সম্পর্কে নীতিমালার কারণে রূপালী ব্যাংকসহ সব ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়।
জানা গেছে, শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের জন্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন তার সময়ে বিভিন্নভাবে শ্রেণিকতৃ ঋণ আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি বছরব্যাপী শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ‘বিশেষ আদায় অভিযান’ চালু করেন। এ কার্যক্রমের আওতায় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বর্তমানে মাঠে কাজ করছেন।
বর্তমান সিইও মো. আতাউর রহমানও এ অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। অভিযান অব্যাহত থাকলে রূপালী ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসবে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর, মাদার টেক্সটাইল, বেক্সিমকো লিমিটেডসহ একাধিক কোম্পানির স্ট্রাকচার ঋণের ওপর সুদ চার্জ করার কারণেই কিছু শ্রেণিকৃত ঋণ বেড়েছে। এটি কোনো ক্রমেই ঋণ বিতরণ নয়। গত ৬ বছরে রূপালী ব্যাংক এমওইউ’র নীতিমালার মধ্যে থেকেই ঋণ বিতরণ করেছে। চলতি বছরেও জুন পর্যন্ত এমওইউ অনুযায়ী হয়েছে।
রূপালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। আমানতের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বেড়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
খেলাপি ঋণ আদায়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান সহকর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, সব ব্যাংকের অবস্থা যে খুবই ভালো তা বলা যাবে না। তবে ননপারফর্মিং লোনগুলোকে কিভাবে পারফর্মিং করা যায় সেই কাজটাকেই অগ্রাধিকার দেবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৬
এসই/জেডএস