এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ২০০৮-০৯ থেকে ২০১১-১২ অর্থ বছরে এভিয়েশন বিমা প্রিমিয়ামের উপর ভ্যাট বাবদ সাধারণ বীমার বকেয়া রয়েছে ৪৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সরকারি এই বিমা প্রতিষ্ঠানটিকে বকেয়া পরিশোধে প্রাথমিক দাবিনামা জারি করা হয় ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট।
অপরদিকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে এভিয়েশন বিমা প্রিমিয়ামের উপর ভ্যাট বাবদ বকেয়া রয়েছে ১০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এই অর্থ পরিশোধে প্রাথমিক দাবিনামা জারি করা হয় ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট। আর চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করা হয় ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর। এরপর ভ্যাট আইনের বিধি ৪৩ এ প্রথম নোটিশ দেওয়া হয় ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল। দ্বিতীয় নোটিশ দেওয়া হয় ২০১৫ সালের ৯ মে। কিন্তু কোনো নোটিশেই কাজ হয়নি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সুদসহ বকেয়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে সাধারণ বিমার কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বকেয়া পাওনা রয়েছে প্রায় ১শ’ কোটি টাকা। কিন্তু বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও বকেয়া পরিশোধ করছে না সংস্থাটি। এজন্যে চলতি মার্চ মাসের ১ তারিখে সাধারণ বিমা করপোরেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুমতি চেয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট।
বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (ভ্যাট) এর সহকারী কমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সি বাংলানিউজকে বলেন,সাধারণ বীমা করপোরেশনের এভিয়েশন বীমা প্রিমিয়ামের উপর ভ্যাট অব্যাহতি প্রাপ্ত নয়। শুধু এভিয়েশন বিমার পুন:বিমার (পুন ইন্সুরেন্স) ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধিত প্রিমিয়াম ভ্যাট অব্যাহতি প্রাপ্ত। যে কারণে এভিয়েশন বিমা প্রিমিয়ামের ভ্যাট প্রয়োজ্য এবং ওই এভিয়েশন বিমা প্রিমিয়ামের উপর বৃহৎ করদাতা ইউনিট ভ্যাট দপ্তর থেকে প্রযোজ্য ভ্যাট আদায় করার জন্য দাবিনামা জারি করেছে। কিন্তু সাধারণ বীমা করপোরেশনের পুন: ইন্স্যুরেন্সের উপর কোনো ভ্যাট দাবি করা হয়নি। এ কারণে সরকারি সংস্থাটিকে তাদের বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। নতুবা যেকোনো মুহূর্তে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে।
এ বিষয়ে সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান ডা. শিবলী রুবায়েত বাংলানিউজকে বলেন, সরকার এভিয়েশন বিমা প্রিমিয়ামের উপর ভ্যাট মওকুফ করায় বর্তমানে আমরা কোনো ভ্যাট দিচ্ছি না। এভিয়েশন বিমা প্রিমিয়ামের বকেয়া বিষয়ে এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বলেছেন ভ্যাট দিতে হবে না। এছাড়া এভিয়েশনের উপর ৩ বছরে যে ভ্যাট দিয়েছি সেটা এনবিআরের কাছে আমরা ফেরত পাবো।
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ বিমা’র কাছে আমাদের অনেক বকেয়া পড়ে আছে। বকেয়া পরিশোধে বারবার তাদের তলব করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। উপরন্তু বকেয়া পরিশোধে কালক্ষেপনের ফলে সুদের পরিমাণ ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের কমিশনাররা আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বকেয়া পরিশোধে কয়েকবার নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। প্রায় ১শ’ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় প্রতিনিয়ত সংস্থাটির সুদ বাড়ছে। এদিকে বৃহৎ করদাতা ইউনিট থেকে সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অনুমতি চেয়ে একটি চিঠি পাওয়া গেছে। তাই যে কোনো মুহূর্তে কমিশনাররা তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৫,২০১৭
এসজে/জেডএম